বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদখেলার সময়শততম আন্তর্জাতিক শতক এসেছে বাংলাদেশের মাটিতে

শততম আন্তর্জাতিক শতক এসেছে বাংলাদেশের মাটিতে

স্পোর্টস ডেস্ক (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

শচীন টেন্ডুলকারের অসংখ্য অর্জনের মধ্যে দুটোর জন্ম বাংলাদেশে। ভারতের ব্যাটিং-কিংবদন্তি লিটল মাষ্টার শচীন টেন্ডুলকরের টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংস এবং শততম আন্তর্জাতিক শতক এসেছে বাংলাদেশের মাটিতে।

বাংলাদেশে ৭টি টেস্ট আর ১৬টি ওয়ানডে খেলা টেন্ডুলকারের শতকের সংখ্যা ৭টি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঐ টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দুই দল ছিল ভারত ও পাকিস্তান। বাংলাদেশে সেটাই ছিল টেন্ডুলকারের প্রথম আগমন। ভারতের শিরোপা জয়ে বড় ভূমিকাও ছিল তার। উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৪ রান এবং পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৭ রান করে দলের জয়ে অবদান রাখেন তিনি। বেস্ট অব থ্রি’ ফাইনালের প্রথমটি ছিল টেন্ডুলকারের নৈপুণ্যে ভাস্বর। প্রথমে তিন উইকেট নিয়ে এবং পরে ৭৮ বলে ৯৫ রান করে তিনি ভারতকে এনে দেন ৮ উইকেটের সহজ জয়।
দ্বিতীয় ফাইনালে শুরুতে টেন্ডুলকারকে (১) হারানোর ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি ভারত। পাকিস্তানও সহজেই ৬ উইকেটে জিতে সমতা নিয়ে আসে।

শিরোপা নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ ছিল রোমাঞ্চ আর নাটকীয়তায় ভরা। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ঐ ম্যাচে ৩১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ভারত দারুণ সূচনা পেয়ে যায় টেন্ডুলকারের মাত্র ২৬ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংসের সৌজন্যে। পরে সৌরভ গাঙ্গুলীর ১২৪ ও রবিন সিংয়ের ৮২ রানের ওপরে ভর করে এক বল ও তিন উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে শিরোপা-উৎসবে মেতে ওঠে ভারত।

সেই বছর অক্টোবরে আবার বাংলাদেশে আসেন টেন্ডুলকার। ‘মিনি বিশ্বকাপ’ নামে পরিচিত উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপে তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের (১৪১ রান ও ৪/৩৮) ওপরে ভর করে অস্ট্রেলিয়াকে ৪৪ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছায় ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ চারের লড়াইয়ে অবশ্য ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। সেদিন টেন্ডুলকারের মতো ভারতও ব্যর্থ। ম্যাচটা ৬ উইকেটে জিতে ফাইনালে চলে যায় ক্যারিবীয়রা।
এর পর এক যুগের বিরতি। ঘরের মাঠে টেন্ডুলকারের খেলা দেখার জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট-পাগল মানুষের অপেক্ষার অবসান হয় ২০০০ সালের মে-জুনে এশিয়া কাপে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললেও বাংলাদেশ (৩৬) ও পাকিস্তানের (২৫) বিপক্ষে বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। তার দলও পারেনি টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছাতে।

সে বছর নভেম্বরে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলতে আবার ঢাকায় আসেন টেন্ডুলকার। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ১৮ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পাননি।

তার চার বছর পর, ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সফরে আসে ভারত। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে অপরাজিত ২৪৮ রান টেস্ট ক্রিকেটে আজো টেন্ডুলকারের সর্বোচ্চ ইনিংস। যদিও ঐ ইনিংস খেলার পথে বেশ কয়েকটি ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনি।
চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে অবশ্য ৩৬ রানের বেশি করতে পারেননি ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান। দুই টেস্টেই ভারত ইনিংস ব্যবধানে জয় পাওয়ায় একবারের বেশি ব্যাট করার সুযোগ হয়নি টেন্ডুলকারের।
এরপর ২০০৭ সালের মে ও ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দুটি করে টেস্ট খেলতে ভারতীয় দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে আসেন টেন্ডুলকার। দুই সিরিজেই দুটি করে শতক আসে তার ব্যাট থেকে। ২০০৭ সালে চট্টগ্রামে ১০১ রান করার পর ঢাকায় অপরাজিত থাকেন ১২২ রানে।

২০১০ সালে চট্টগ্রামে ১০৫ রানে অপরাজিত থাকার পর ঢাকায় খেলেন ১৪৩ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। সেটাই বাংলাদেশে তার শেষ টেস্ট ইনিংস।
ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান বাংলাদেশেও দারুণ সফল। বাংলাদেশে ৭ টেস্টে ৫টি শতকসহ ১৩৬.৬৬ গড়ে ৮২০ রান এবং ১৬ ওয়ানডেতে দুটি শতক ও পাঁচটি অর্ধশতকসহ ৫১.৬৮ গড়ে ৮২৭ রান করেছেন তিনি।
দুই ধরনের ক্রিকেটেই প্রতিবেশী দেশে তার গড় ক্যারিয়ার গড়ের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশে বল হাতেও তিনি সফল। বিশেষ করে ওয়ানডেতে। বাংলাদেশে দুবার ম্যাচে ৪ উইকেট নেয়া টেন্ডুলকারের মোট উইকেট ১৯টি, গড় ২০.৫২, সেরা ৪/৩৮। টেস্টে ২৬ গড়ে উইকেট নিয়েছেন পাঁচটি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ