বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়মানুষকে আটকে রাখা যাচ্ছে না। নানা অজুহাতে ঘরের থেকে বের হচ্ছে

মানুষকে আটকে রাখা যাচ্ছে না। নানা অজুহাতে ঘরের থেকে বের হচ্ছে

১ জুলাই থেকে সারাদেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি অফিস বন্ধ। বন্ধ শপিং মলসহ বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান। কেবল কাঁচাবাজার খোলা রাখা হয়েছে সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। আর খোলা আছে ওষুধের দোকান। খাবারের দোকান খোলা থাকলেও সেখানে বসে খাওয়ার কোনও উপায় নেই, অনলাইনে অর্ডার করে নিয়ে আসা যাবে। করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধ করতে মানুষ যেন ঘর থেকে না বের হয় সেজন্য নেওয়া হয়েছে এসব উদ্যোগ। কিন্তু তারপরও মানুষকে আটকে রাখা যাচ্ছে না। নানা অজুহাতে ঘরের থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছে দিনে-রাতে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টা। ধানমন্ডি লালমাটিয়া এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন চায়ের দোকানে মানুষের ভিড়। কারও মুখে মাস্ক নেই। টহল পুলিশের গাড়ি দেখলে দোকান বন্ধ হচ্ছে। ক্রেতারা আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে, কাজের ভান করছে। পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার পরে আবারও আগের পরিস্থিতি।

সোমবার রাত ১১টা। আগারগাঁওয়ের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সামনের রাস্তাজুড়ে এলোমেলো আড্ডা। বাইক নিয়ে বন্ধুদের মহড়া চলছে। গাছের আড়ালে চায়ের ব্যবস্থাও আছে। নারী-পুরুষ শিশু নির্বিশেষে চলছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা। তবে চোখ আশেপাশে ঘুরছে কোনও দিক দিয়ে পুলিশের গাড়ি  আসে কিনা দেখার জন্য। কেবল পুলিশের গাড়িকেই যেন ভয়। বাসা থেকে বের হওয়া, আড্ডা দেওয়া সবই যেন পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা।

লকডাউন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ দফায় জনগণকেই দায় নিতে হবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ বুঝছে না। পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার নামে আসলে সে নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছে।

এদিকে টানা ছয় দিনের লকডাউনের পরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬৩ জন আর শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৫২৫ জন। ৬ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ।

পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত পাবলিক হেলথ কমিটির সদস্য জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, একদিকে দোকান মালিকরা বলছেন দোকান খুলে দিন। ব্যবসায়ীরা নানা শর্ত নিয়ে হাজির হচ্ছে। এই যদি হয় পরিস্থিতি সবকিছু খুলে দেওয়া হোক, আর কিছু বলার নেই।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরী বলেন, এই যে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে হলেও বাইরে অপ্রয়োজনে বের হওয়া এই ফাঁকি কি মানুষ পুলিশকে দিচ্ছে? তাকে বুঝতে হবে আক্রান্ত হলে সে এবং তার পরিবার সদস্যরা হবে। তাহলে কি এই ফাঁকি নিজেকে দেওয়া হলো না? লকডাউনের কথা উঠলেই জীবন জীবিকার কথা উঠে আসে। সেটি খুবই যৌক্তিক। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য অযথা বাইরে ঘুরাঘুরি, কিংবা পারিবারিক কোনও উৎসব আয়োজন মহামারিকালে আসলে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ ছাড়া আর কিছুই না।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ