বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়সবার দৃষ্টি এখন সাকা চৌধুরীর দিকে

সবার দৃষ্টি এখন সাকা চৌধুরীর দিকে

সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে আবদুল কাদের মোল্লার ব্যাপারে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষার প্রহর কেটে গেছে মঙ্গলবার। সবার দৃষ্টি এখন এ ধরনের মামলায় আরেক অভিযুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর দিকে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় অপেক্ষমাণ রাখার পর ইতোমধ্যে কেটে গেছে এক মাসেরও বেশি সময়। এবার সবার জিজ্ঞাসা, সাকা চৌধুরীর রায় কবে কী আছে তার ভাগ্যে ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশনের একাধিক সূত্র মতে, এ মামলার রায় হতে পারে আগামী সপ্তাহে। তবে অভিজ্ঞতা বলছে, পরদিন রায় দেওয়ার বিষয়টি আগের দিন জানিয়ে দেবেন ট্রাইব্যুনাল। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার রায় অপেক্ষা করছে ১৪ আগস্ট থেকে। শুনানিতে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে প্রসিকিউশন; আর খালাস চেয়েছে আসামিপক্ষ। গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুট, দেশান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৩টির মধ্য থেকে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগের সমর্থনে সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘আমরা তো আশা করছি, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে আগামী সপ্তাহেই। দেখা যাক, কি হয়’ তিনি বলেন, ‘সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তিতর্কে প্রসিকিউশন প্রমাণ করেছে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন। তাই আইন অনুযায়ী তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলেই আমরা মনে করি।’ সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে প্রসিকিউশন। একই বছরের ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক এ অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তার বিচার শুরু হয় ২৩টি অভিযোগে। গত বছরের ১৪ মে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় চলতি বছরের ২৮ জুলাই। প্রসিকিউশনের পক্ষে ৪১ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে, তবে আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষী হাজির করেছে চারজন। প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, ‘অতি শীঘ্রই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আমাদের কাক্সিক্ষত রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশা করছি।’ তবে ‘অতিসম্প্রতি’ কবে শেষ হবে তা জানাতে পারেননি এই প্রসিকিউটর। একাত্তরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৪৩৭ ব্যক্তিকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে চট্টগ্রামের রাউজানের শাকপুরা, ঊনসত্তরপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চালানোরও অভিযোগ। এসব ঘটনা ঘটে সাকা চৌধুরীর উপস্থিতি ও নির্দেশে অভিযুক্তের সহযোগী ও পাকিস্তানি সেনাদের মাধ্যমে। লক্ষ্য ছিল, হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন ও সংখ্যালঘুদেও দেশান্তর। প্রসিকিউশনের আরও অভিযোগ, অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যার ক্ষেত্রে টর্চারসেলের ভূমিকা পালন করে চট্টগ্রামে সাকা চৌধুরীর বাড়ি ‘গুডস হিল।’ এখানে মুক্তিযোদ্ধা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও নারীদের ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর হত্যা করা হতো। ২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন সাকা চৌধুরী। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক দেখানো হয় ১৯ ডিসেম্বর। তিনি এখন কারাগারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ