শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনএকনেককে অনুমোদন পেয়েছে পটিয়ার বহুল প্রত্যাশিত ‌‘পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও...

একনেককে অনুমোদন পেয়েছে পটিয়ার বহুল প্রত্যাশিত ‌‘পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ’ প্রকল্প

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে পটিয়ার বহুল প্রত্যাশিত ‌‘পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ’ প্রকল্পটি। ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মেরিন ড্রাইভের আদলে সুরক্ষিত হবে পটিয়া। বন্যারোধ ও জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে কয়েক লাখ মানুষ। এছাড়াও চাষাবাদের আওতায় আসবে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

৪ মে একনেক সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যে দু’টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়, তার মধ্যে পটিয়ার প্রকল্পটিও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ সভায় পরিকল্পনামন্ত্রীসহ একনেক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে খাল খনন প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘সাবধান! খাল খননের নামে যেসব কাণ্ড হয়! এটা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জানেন। আমরাও সবাই মোটামুটি জানি। তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, সেচে সেচে উপরের দিকে দেখিয়ে…। মানে দেখাবার একটা প্রবণতা আছে। সেদিকে আমাদেরকে তিনি সাবধান করেছেন।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পটিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১২ ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ জলাবদ্ধতা নিরসন, ভাঙনরোধ ও সেচ সুবিধা পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আশিয়া, হাবিলাশদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।

প্রকল্পে ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে শিকলবাহা, চাঁদখালী ও বোয়ালখালী খালের ডান তীরে ২২ দশমিক ২০০ কিলোমিটার। চাঁদখালী খালের বাম তীরে ৩ দশমিক ৩১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

এছাড়াও ১১টি খালের ৩০ দশমিক ২০০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। দুই দশমিক ৯৫০ কিলোমিটার নদী-খালের তীর সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্পে ২৬টি খালে রেগুলেটর বসানো হবে। ২৬ টি খালের রেগুলেটর নির্মাণ করার মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৩২শ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনা হবে। ৪ দশমিক ১০০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হবে। চাঁদখালী খালের ডান তীরে ২৩৫০ মিটার, বাম তীরে ৮৫০ মিটার এবং বোয়ালখালী খালের ডান তীরে ৯০০ মিটার। এর মাধ্যমে বর্ষায় বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল রক্ষা করা হবে।

প্রকল্পে একটি সেতুও নির্মাণ করা হবে। খানমোহনা এবং ধলঘাট স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চাঁদখালী খালের উপর এই সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণ করা হবে ৫৮ দশমিক ৯২৮ হেক্টর। এরমধ্যে ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

প্রকল্পে বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, দুই পাশে ওয়ার্কও নির্মাণ, খালের তীরের যানবাহন চলাচল উপযোগী সড়ক ও ইকো-ট্যুরিজমে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা ছিল। তা বাদ দিয়ে প্রকল্পটি ছোট করা হয়।

এদিকে প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন হওয়ার পর ফেসবুকে এক প্রতিক্রিয়ায় পটিয়ার সাংসদ ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরী লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতার কন্যা ,দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আপনি আমার পটিয়ায় দেখা স্বপ্ন ও পরিশ্রমকে আজ বাস্তবে রূপান্তরিত করলেন। পটিয়ার জনগণকে ঈদের উপহার হিসাবে বৃহত্তর প্রকল্প ১,১৫৮.৩৬ কোটি টাকা একনেকে আজ অনুমোদন করে দিয়ে আমি ও আমার পটিয়াবাসীকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করলেন।

তিনি আরও লিখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার পটিয়ার এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সারা পটিয়ার চতুর্দিকে মেরিন ড্রাইভ, সুইচগেইট, বেড়িবাঁধও খাল খনন সহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। হাজার হাজার একর ফসলি জমি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট রক্ষা পাবে বন্যার কবল থেকে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবারও আপনাকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ