বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে রোববার কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূরপ্রাচ্য অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. আবু জাফর বলেন, আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে শিনজো আবেকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি ঢাকা ছাড়ে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে বিদায় জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। এর আগে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে যান জাপানের প্রধানমন্ত্রী।

দুই দিনের সফরে গতকাল দুপুরে ঢাকায় আসেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিনজো আবে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে তিনি ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে শিনজো আবে রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আয়োজিত জাপান-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দেন। শীর্ষ বৈঠক শেষে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। এরপর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেল স্যুটে প্রথমে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং পরে সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন শিনজো আবে।
গতকাল বিকেলে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে দুই প্রধানমন্ত্রী প্রথমে একান্তে ১৫ মিনিট আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টার আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দুই প্রধানমন্ত্রী। শুরুতে তাঁরা যৌথ ঘোষণায় সই করেন। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে যে দুটি ব্যাঘ্রশাবক দেওয়া হবে, সেগুলোর ছবির অ্যালবাম শিনজো আবের হাতে তুলে দেন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শিনজো আবে জাপানে তৈরি দুই দেশের মুদ্রাসংবলিত একটি স্মারক শেখ হাসিনাকে উপহার দেন। ওই স্মারকে বাংলাদেশের মুদ্রার এক পিঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান দুই প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যপদের নির্বাচনে জাপানের সমর্থনে বাংলাদেশের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সমন্বিত অংশীদারত্ব কর্মসূচি ও বিগ-বি উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের জবাবে বন্ধুতার প্রতি ত্যাগ স্বীকারের এ উদার দৃষ্টান্ত দেখানোয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।  যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে শিনজো আবের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শিনজো আবে উল্লেখ করেন, বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে স্থান নির্বাচন, প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা নিশ্চিত, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শ্রমিকের জোগান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেবার মান বাড়ানোর ব্যাপারে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা। তিনি জাপানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়াতে উত্সবিধি শিথিল করার পরামর্শ দেন।

বিগ-বি উদ্যোগের আওতায় দুই প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ নেটওয়ার্কের উন্নয়ন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহ, অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নসহ নগর উন্নয়ন ও বেসরকারি খাতের বিকাশে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অর্থনৈতিক অবকাঠামো, বিনিয়োগের পরিবেশের উন্নয়ন ও যোগাযোগ নেটওয়ার্ককে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে বিগ-বি উদ্যোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের জন্য জাপানের উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে পারস্পরিক সুফল লাভের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। দুই প্রধানমন্ত্রী সামুদ্রিক সম্পদ টেকসই উপায়ে ব্যবহারেও সম্মত হয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে ব্লু ইকোনমি বা সাগর অর্থনীতির বিকাশে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ