৭ জুন শুক্রবার ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা উত্থাপনের পর এর সমর্থনে ৭ জুন সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। আন্দোলনকারীদের দমনে শাসক গোষ্ঠীর নির্বিচার গুলিতে সেদিন শহীদ হন মনু মিয়াসহ ৯ জন। শহীদদের রক্ত আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ করে, যার পরিণতিতে অর্জিত হয় ৭১’এ স্বাধীনতা। আশেকীন প্রিন্সের প্রতিবেদন।
বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেন। এই ছয় দফায় বাঙালির সমর্থণ আদায়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সফর করেন। শাসকগোষ্ঠী সেসময় বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে। চলতে থাকে দমন পীড়ন আটক। এসবের প্রতিবাদে ৭ জুন হরতাল আহ্বান করে আওয়ামী লীগ।
সাত জুনকে স্বাধীনতার পথে প্রথম দিবস হিসেবে উল্লেখ করে স্মৃতিচারণ করলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি জানান, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তারা মিছিলে নিয়ে এগিয়ে যান শাহবগের দিকে। সেই মিছিলে তার পাশেই একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাকে সবাই মিলে তুলে নিয়ে তেজগাঁও’র কহিনূর কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্টির উল্টা পাশে একটি ছোট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হরতাল প্রতিরোধে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করলে মুক্তিকামী জনতা তা ভেঙে সামনে এগিয়ে যায়। তখন সরকার কার্ফ্যু জারি করে। তখন ছাত্রনেতারা শাহবাগ থেকে কার্জন হল পর্যন্ত কার্ফ্যু ভঙ্গ করেন।
ইতিহাস বলে, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার মধ্যেই ছিল নিহিত ছিল এদেশের স্বাধীনতার বীজ।
এবিষয়ে ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ছয় দফাকে বলা হয়ে তাকে বাঙালির ‘মুক্তির সদন’। এটি ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্র কাঠামোর গণতন্ত্রায়নের সুচিন্তিত উদ্যোগ।
এই ইতিহাসবিদের মতে, ছয় দফা ছিল বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির দিক নির্দেশনা, এর সঙ্গে যুক্ত হয় ছাত্র সমাজের ১১ দফা। যা একাত্তরে সৃষ্টি করে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট।
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার সারাদেশে পালিত হচ্ছে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। এ উপলক্ষে সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়াম লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও শ্রদ্ধা জানান।