বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদটপকাশিমপুর কারাফটকে তাজিনের মরদেহ

কাশিমপুর কারাফটকে তাজিনের মরদেহ

গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে অভিনেত্রী তাজিন আহমেদের লাশ দেখে কাঁদলন তার মা দিলারা জলি। মাকে শেষবারের মতো দেখাতে বুধবার সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের হিমঘর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাজিনের মরদেহ কারাগারে নেয়া হয় বলে জানান জেলার উম্মে সালমা। তাজিনের মা দিলারা জলি চেক ডিজঅনারের একটি মামলায় দুই বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন। মেয়ের লাশ নেয়ার পর কারাগারের ভেতর থেকে তাকে কারাফটকে আনা হয়। সেখানে মেয়ের লাশ দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি। মা দিলারা জলি কিছু সময় তাজিনের লাশের পাশে বসে থাকেন। এরপর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তরার আনন্দবাড়ি শুটিং স্পটে তার লাশ রাখা হয়।

সেখানে তাজিনের সহকর্মী ও বিনোদন জগতের অনেকেই তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেখানে লাশ রাখার পর জানাজার জন্য গুলশানের আজাদ মসজিদে নিয়ে আসা হয়। জানা গেছে, রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবার কবরে তাজিন আহমেদকে দাফন করা হবে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাজিন আহমেদ মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে দুপুরের দিকে নিজ বাসায় তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। এরপর অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে।

জানা গেছে, যখন তাজিনের হার্ট অ্যাটাক হয় তখন বাসায় কেবলমাত্র একজন মেকাপ আর্টিস্ট ছিলেন। উনি তাজিনের সঙ্গেই থাকতেন। তিনিই তাজিনকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন হাসপাতালে তাজিনের সঙ্গে যান রওনক হাসান, জাকিয়া বারী মম, হুমায়রা হিমু ও আরও অনেকে।

১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন তাজিন আহমেদ। তিনি বেড়ে উঠেছেন পাবনা জেলায়। ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন এ অভিনেত্রী। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি।

দিলারা ডলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার অভিনয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। নাটকটি ১৯৯৬ সালে বিটিভিতে প্রচার হয়। এরপর তিনি অসংখ্য নাটক-টেলিছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদের নাটক ‘নীলচুড়ি’তে অভিনয় করেও বেশ আলোচিত হন। তার সর্বশেষ অভিনীত ধারাবাহিক নাটক ‘বিদেশি পাড়া’। তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন।

তাজিন আহমেদ আনন্দ ভুবন ম্যাগাজিনের কলামিস্টও ছিলেন তিনি। পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পাবলিক রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সঙ্গীত শিল্পী ও পরিচালক রুমি রহমানের সাথেই সংসার জীবনে আবদ্ধ ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ জীবনে একাকী জীবন কাটছিল তার।

মায়ের হাত ধরেই অভিনয়ে আসেন তাজিন আহমেদ। মা দিলারা জলির প্রোডাকশন হাউজ ছিল। তিনি দীর্ঘদিন থিয়েটারেও অভিনয় করেছেন। ‘নাট্যজন’ থিয়েটারের হয়ে বেশকিছু নাটকে তিনি অভিনয় করেন। এরপর ‘আরণ্যক’ নাট্যদলের হয়ে ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটকে কাজ করেছিলেন। এতে তিনি বলাকা চরিত্রে অভিনয় করেন। তার সর্বশেষ অভিনীত মঞ্চনাটক এটি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ