শুক্রবার, মে ২৪, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউসমন্বয়হীনতার অভাবে সফলভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারছে না বিএনপি

সমন্বয়হীনতার অভাবে সফলভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারছে না বিএনপি

স্টাফরিপোর্টার🙁বিডিসময়২৪ডটকম)

সরকারবিরোধী কঠোর আন্দোলনের হুংকার আর নির্বাচনের প্রস্তুতির জানান দিলেও  সমন্বয়হীনতার অভাবে সফলভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পারছে না দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জনমত গঠন এবং সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতা দূর করতে চলতি মাসের ১৮ তারিখ দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে ৫৬টি টিম গঠন করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নেয়ার পাশাপাশি ৩০০ আসনের যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে কাজ করবে এ লক্ষ্যেই মূলত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৫৬টি টিম গঠন করেছেন।

তবে এসব টিমের প্রধানদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী মনোভাবে তৃণমূল নেতাদের ক্ষোভ বাড়ছে। এ নিয়ে তারা অস্বস্তিতে ভুগছেন। ৩১ আগস্টের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেপ্টেম্বরের আগে শেষ হচ্ছে না এই কর্মসূচি।

বিএনপি চেয়ারপারসন রমজান মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা করলেও তাতে কাঙিক্ষত অর্জন হয়নি বলেই নতুন করে এই টিম গঠন করা হয়েছে। ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম পর্যায়ে থাকলেও দলের শীর্ষ নেতারা তা স্বীকার করছেন না। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, সিলেট বিএনপির কোন্দল নিরসন সম্ভব হয়নি।

হবিগঞ্জ জেলার টিম প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। আগামী ২৯ তারিখের টিম প্রধানের সভায় নিঁখোজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী উপস্থিত থাকতে পারেন বলে কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি.কে গউজ এর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। এই ইস্যুতে সারাদেশের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অনেক শীর্ষ নেতাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলার তৃণমুল নেতারা ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করেই নিজেদের মতো করে কর্মসূচি দিয়েছেন। তবে হাইকমান্ডের চোখ রাঙানির ভয়ে তারা নাম প্রকাশ করতে চাইছেন না।

তবে ময়মনসিংহ উত্তরের সভাপতি আফজাল এইচ খান এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করেন। তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমি জানি কারা এ ধরণের অভিযোগ করেছেন। যারা নতুন বিএনপি করছে তারাই এ ধরনের কথা বলছেন।’

ময়মনসিংহ জেলার দলনেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বিডিসময় টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। দলনেতা কাজী আসাদুজ্জামান স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগামী ৩০ তারিখ কর্মসূচি নির্ধারণ করেছেন।’

কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফরের বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বিডিসময় টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রমজান মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনাই বেশি হয়েছে। যার কারণে বিএনপি এবং ১৮ দলীয় জোটের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি। ৩১ আগস্টের মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক সফর সম্পন্ন করার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ ঢাকার বাইরে বা দেশের বাইরে আছেন। আশা করছি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আমাদের এই কর্মসূচি সম্পন্ন হবে। কর্মসূচি কতটুকু সফল হয়েছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তা বোঝা যাবে।’

প্রসঙ্গত, চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করেন। তাছাড়া ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজনীতিতে যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছিল তখন তৃণমূল নেতারাই বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষায় কাজ করেছে বলে দলের শীর্ষ নেতারা মনে করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ