রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বন্দুকযুদ্ধে ফাহিম নিহত

বন্দুকযুদ্ধে ফাহিম নিহত

মাদারীপুরের কলেজশিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ডে থাকা গোলাম ফয়জুল্লাহ ফাহিম (১৯) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল ফয়জুল্লাহকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদের ভাষ্য, ফয়জুল্লাহর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ অভিযানে নামে। আজ সকাল সাতটার পর সদর থানার মিয়ারচর এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে ফয়জুল্লাহর সহযোগীরা অবস্থান করছিল। তারা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে থাকা ফয়জুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তাঁর বুকের বামপাশে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ২০ জন পুলিশ দুটি গাড়ি নিয়ে এ অভিযান চালায় বলে জানান ওসি। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, তিনটি গুলি ও ছয়টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে কনস্টেবল আলী হোসেন আহত হন। তাঁকে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে পুলিশ লাইনের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর আগে সকালে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সারওয়ার হোসেন বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ফয়জুল্লাহর সহযোগীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশের গাড়িতে গুলি লাগে। এ সময় ফয়জুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। দুপুর ১২টায় পুলিশ সুপার বলেন, ফয়জুল্লাহ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। ফয়জুল্লাহকে হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি জিয়াউল মোর্শেদ। শুক্রবার পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুল্লাহ বলেছেন যে তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের হামলায় হিযবুত তাহরীরের কোনো সদস্য আটক হওয়ার এটা প্রথম ঘটনা।

বুধবার বিকেলে মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দীন কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে তাঁর বাসায় ঢুকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালাতে থাকে। তখন জনতা ধাওয়া করে ফয়জুল্লাহকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানায় ফয়জুল্লাহসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। বাকি পাঁচ আসামি হলেন সালমান তাকসিন ওরফে আবুল হোসেন ওরফে সালিম (১৯), শাহরিয়ার হাসান ওরফে পলাশ (২২), জাহিন (২৩), রায়হান (২৪) ও মেজবাহ (২৪)। পুলিশ জানায়, ফয়জুল্লাহর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ফয়জুল্লাহর ছবি বরিশালে চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষককে দেখানো হয়। তিনি ফয়জুল্লাহকে হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করেন। হামলায় ফয়জুল্লাহর সঙ্গে অংশ নেন সালিম ও পলাশ। জাহিন, রায়হান ও মেজবাহ বাসার বাইরে পাহারায় ছিলেন।

ঢাকার দক্ষিণখানের বাসিন্দা ফয়জুল্লাহ উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই কলেজের সাবেক এক ছাত্রের মাধ্যমে ফয়জুল্লাহ উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ হন। ফয়জুল্লাহর বাবা ওমর ফারুক গতকাল  বলেন, তাঁর ছেলে হিযবুত তাহরীর বা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা তিনি জানেন না। তবে ধর্মীয় বইপুস্তক পড়তেন। শিবির ও তাবলিগের বিরুদ্ধে বলতেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করতেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ