শনিবার হজ ফ্লাইটের শেষদিন। এরমধ্যে দু’টি হজ এজেন্সির প্রতারণার শিকার ৫৯ জন হজযাত্রী এবার পবিত্র হজব্রত পালনে মক্কা যেতে পারছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ বিষয়টি নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ এসেছে। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতারিত হজযাত্রীরা এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব অভিযোগ করেন। করাপশন নিউজ এজেন্সি’র সহযোগিতায় প্রতারিত হজযাত্রীরা এর আয়োজন করেন।
প্রতারণা করা হজ এজেন্সি দু’টি হলো, আল-নাঈম এয়ার ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি (লাইসেন্স নং-২৩) ও আল আসফাক ইন্টারন্যাশাল (লাইসেন্স নং-৩৬৫)। বর্তমানে ৫৯ জন হজযাত্রী হজ ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। আর হজযাত্রীদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ করেন মো. জান্নাতুল ফেরদৌস। জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, দুইটি এজেন্সি হজযাত্রীদের জনপ্রতি প্রথমে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করে। পরে ৫৯ জন হজযাত্রী দাবিকৃত টাকা দিলে পাসপোর্ট নেওয়া হয়। এর কিছুদিন পরই আল-নাঈম এয়ার ইন্টারন্যাশনাল মালিক প্রতারক আবদুর রব আরো ২০ হাজার টাকা না দিলে ভিসা ও টিকেট দেবে না বলে জানায়।
ফেরদৌস অভিযোগ করেন, বাধ্য হয়ে হজযাত্রীরা আরো ২০ হাজার টাকা দেয়। এ হিসেবে ৫৯ জন হজ্জযাত্রী থেকে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে হজযাত্রীরা পাসপোর্ট, ভিসা, টিকেট চাইলে তাদের হজ ক্যাম্পে অবস্থান করার জন্য বলা হয়। সেখানে সব পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানায় এজেন্সির কর্মকর্তারা।
ফেরদৌস বলেন, হজযাত্রীরা পরে খবর নিয়ে জানতে পারে ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে দুই এজেন্সির মালিক গা ঢাকা দিয়েছে। পরে অফিস ও প্রতারক আবদুর রবসহ কর্মকর্তাদের ফোনে চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ মহলে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি তারা। ফলে নিরুপায় হয়ে এসব হজযাত্রী পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই দ্বিতীয়বার হজ করার সামর্থ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন হজ্জযাত্রী বলেন, অনেক আশা নিয়ে দুই এজেন্সিকে টাকা দিয়েছি। কিন্তু দুই এজেন্সি কর্মকর্তারা এরকম প্রতারণা করবে ভাবতেও পারিনি। হজ ফ্লাইট শেষ হতে মাত্র একদিন বাকি। আমরা পরিবারে মুখ দেখাতে পারবো না।
হজযাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, এরআগেও দু’টি এজেন্সি প্রতারণা করলেও পার পেয়ে গেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় চাইলে দুই এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের হজে পাঠাতে পারে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। প্রতারক আবদুর রব-এর হাত নাকি অনেক লম্বা। প্রতারক আবদুর রবসহ দুই এজেন্সির কর্মকর্তাদের গ্রেফতার, কঠোর শাস্তি, লাইন্সেস বাতিল ও টাকা উদ্ধারের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ৫৯ জন হজযাত্রীকে হজে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ধর্মমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।