সোমবার, মে ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ড্যাপের কারণে ঝুঁকিতে থাকা জনসাধারণ ভয়াবহ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়েছে

প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ড্যাপের কারণে ঝুঁকিতে থাকা জনসাধারণ ভয়াবহ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়েছে

ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পর্যালোচনা ও সংশোধনের জন্য ২০১০ সালের ২৭ জুন একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তা সংশোধন করে ১৬ সদস্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি সাত সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। পরে এ কমিটিও পুনর্গঠন করে আট সদস্যের করা হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে ড্যাপসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পাঁচটি সভায় প্রায় ১৫০টি আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ড্যাপের কারণে ঝুঁকিতে থাকা জনসাধারণ ভয়াবহ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়েছে। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ বাস্তবায়ন করে একটি মহল বিশাল জনগোষ্ঠীকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে দায়িত্ব নিয়ে জনগণকে অপূরণীয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন। সূত্র জানায়, ড্যাপের কারণে গত ১০ বছরে কোনো আবাসন প্রকল্প অনুমোদন করতে পারেনি রাজউক। ফলে বেসরকারি খাতে ৫০টিরও বেশি আবাসন প্রকল্প আটকে আছে। এমনকি রাজউকও নিজেদের তিনটি প্রকল্প হস্তান্তর করতে পারেনি।  নতুন আবাসন প্রকল্প না হওয়ায় এ খাতের কয়েক লাখ শ্রমিক এরই মধ্যে বেকার হয়ে পড়েছেন।

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের নেতারা বলেন, একটি জমিতে বড় কোনো স্থাপনা নির্মাণ হয়ে গেলে তা ভাঙা বা সরিয়ে নেওয়া খুবই কঠিন। এ বিবেচনায় ঢাকার আশপাশে যেসব আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে সেগুলো এখন আর সরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২২ জুন রাজধানীর কাঠামোগত পরিকল্পনার আওতায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ তৈরি করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ পরিকল্পনায় ঢাকা মহানগরীর কোন এলাকায় জলাশয় থাকবে, কোথায় খেলার মাঠ হবে, কোথায় বসবাসের জন্য ভবন হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই পরিকল্পনা তৈরির জন্য জরিপের কাজে নিয়োজিত ছিল চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ রয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানগুলো গণহারে বসতভিটা ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিকে বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে দেখিয়ে দেয়। পাশাপাশি কেবল স্থপতি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও পরিবেশবাদীদের সুপারিশে ড্যাপ তৈরি করা হয়।  সেখানে হাইড্রোগ্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার, ল্যান্ডস্কেপ ইঞ্জিনিয়ার, ভূতত্ত্ববিদ, পানি বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে শুধু পুঁথিগত বিদ্যা কাজে লাগিয়ে ড্যাপ তৈরি করা হয়। এ ড্যাপ বাস্তবায়ন হলে সংশ্লিষ্ট সব শ্রেণির মানুষের ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা ছিল।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভে না করায় উপযুক্ত নিচু জায়গা সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি। ফলে বাস্তবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, কবরস্থান, কারখানাকে জলাশয় (রিটেনশন পন্ড) হিসেবে দেখানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড্যাপের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন করে জনভোগান্তি দূর করতে মন্ত্রিসভা কমিটি উদ্যোগ নিয়েছে। ড্যাপ সংশোধন আর আবাসন প্রকল্প অনুমোদন সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। আবাসন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০০৪ (সংশোধিত-২০১২) অনুযায়ী গঠিত কমিটি এ বিষয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত।

আবাসন প্রকল্প তখনই অনুমোদন দেওয়া হয় যখন ভূমি উন্নয়ন বিধিমালার সব শর্ত ঠিকমতো পূরণ করা হয়। পরিকল্পনা প্রণয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিশ্বের সব দেশই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, পরিবেশসহ বিভিন্ন বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরকে পরিকল্পিত ও আধুনিক করার জন্য শহরের পরিকল্পনা সময়োপযোগী ও বাস্তবায়নযোগ্য করে সংশোধন করা যায়। এ বিষয়ে ঢাকা নগরীর জন্য প্রণীত বর্তমান স্ট্রাকচার প্ল্যানে (১৯৯৫-২০১৫) স্পস্টভাবে উল্লেখ করা আছে, প্রতি পাঁচ বছর পর পর শহরের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে নীতি পর্যালোচনাও সংস্কার করতে হবে।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ