বুধবার, মে ৮, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিসাত মাসের মধ্যে প্রথম হরতাল

সাত মাসের মধ্যে প্রথম হরতাল

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন লাগাতার হরতাল-অবরোধের পর গত সাড়ে সাত মাসের মধ্যে রোববার প্রথম হরতাল হচ্ছে দেশজুড়ে। অর্ধদিবস এ হরতাল পালন করছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা। গত ৫ জানুয়ারি বিএনপিহীন নির্বাচনের পর দলটির নেতৃত্বাধীন জোট ওই মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত অবরোধ-হরতাল পালন করে। পরে ধংসাত্মক কর্মসূচিতে জনসমর্থন না পেয়ে ধীরে ধীরে হরতাল-অবরোধ থেকে সরে আসে বিএনপি জোট। রোববারের হরতালের ইস্যু ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যা।

গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাড়িতে পরিবারের সবাইকে বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ফারুকী সুন্নি মতাবলম্বী সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের একটি ইসলামী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল পালন করছে ইসলামী ছাত্রসেনা। তবে হরতালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি, কম থাকলেও রাজপথে চলছে যানবাহন। সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল করলেও শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে ইসলামী ছাত্রসেনার। হরতালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসেন। হরতালে প্রভাব পড়েনি অফিস-আদালতে। সচিবালয়ে উপস্থিতি ছিল প্রায় অন্যান্য দিনের মতই। রাজধানীর মতিঝিল ব্যাংকপাড়া যেমন সচল, তেমনি খোলা রয়েছে দোকানপাট।

হরতালে ট্রেন, লঞ্চ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছাড়লেও দূরপাল্লার বাস ছেড়েছে কম। তবে পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, দ্রুতই সব বাস ছাড়বেন তারা। হরতালে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য রাজধানীতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ও স্পর্শকাতর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।শনিবার রাজধানীর ফকিরাপুলে সংবাদ সম্মেলন করে হরতালের ঘোষণা দেন ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি নুরুল হক চিশতী। এ সময় তিনি দেশের বন্যা কবলিত জেলাগুলোকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঘোষণা দেন। চলতি বছরে গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১ জানুয়ারি থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত লাগাতার অবরোধ পালন করে বিএনপি জোট। গত ৪ ও ৫ জানুয়ারি অবরোধের পাশাপাশি হরতাল ও ৬ জানুয়ারি শুধু হরতাল পালিত হয়।

নির্বাচনের সময়টিতে বেশি সহিংসতা হলেও ৭ জানুয়ারি হরতাল ১২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়, চলে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। ৮ জানুয়ারি থেকে চলে অবরোধ। ৯ জানুয়ারি অবরোধ থাকলেও তা পালন হয় ঢিমেতালে। এরপর দুই দিন বিরতি দিয়ে ভিডিও বার্তায় ১২ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ ঘোষণা করেন বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক। ঢিমেতালে কর্মসূচি পালিত হওয়ায় লাগাতার অবরোধের ঘোষণা থাকলেও ১০ ও ১১ জানুয়ারি বিরতি দিয়ে শুধু ১২ জানুয়ারি অবরোধ পালনের ঘোষণা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর গত ১২ জানুয়ারিই অবরোধ দিয়ে শেষ হয় নির্বাচনে না আসা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি। গত সাত মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের কিছু জেলায় স্থানীয়ভাবে দু’একদিন হরতাল পালন হলেও তা জাতীয় রাজনীতিতে তেমন প্রভাব ফেলেনি।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ