চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ। শুক্রবার সকাল থেকে এ নিয়ে দু’টি গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। আহত হয়েছেন অন্তত তিন জন ছাত্রলীগ নেতা।
পুলিশ সুপার (উত্তর) মো.শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমানে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও স৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে তিন ছাত্রলীগ নেতার উপর প্রতিপক্ষের হামলার জের ধরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। উভয় গ্রুপ সশস্ত্র অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে।
প্রতিপক্ষের হামলালয় আহতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক একরামুল করিম মহসিন, সহ-সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রকি। তারা সকলেই নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। এদের মধ্যে প্রথম জন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন ‘একাকার’ এবং পরের দুইজন ‘কনকর্ড’ গ্রুপের নেতা।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোমবার কনকর্ড গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস’ (ভিএক্স) গ্রুপের নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে কনকর্ড গ্রুপের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায় ভিএক্স সদস্যরা। এসময় কনকর্ড নেতাদের উপর হামলায় বাধা দিতে গিয়ে এককার গ্রুপের মামুনও আহত হন।
ভিএক্স বগিটি নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, আরিফুল ইসলামসহ নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী সমর্থক কয়েকজন নেতা। কনকর্ড নেতাদের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রুপ সহ আ জ ম নাছির অনুসারী অন্যান্য গ্রুপগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে গোল চত্বরে জড়ো হয়ে মূল ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় প্রতিপক্ষের কর্মীরা শাহাজালাল হলের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে, পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় এক ভিএক্স কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থীদের বহনকারী শাটল ট্রেন আটকে দেয় একাংশের কর্মীরা। এতে মারাত্মক দুর্ভোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে, প্রক্টরের অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক খুলে দেওয়ার পাশাপাশি শাটল ট্রেন চলাচল করতে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। দুপুর আড়াইটার শাটল ট্রেনটি সাড়ে তিনটায় ক্যাম্পাস ছাড়ে।