শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র সাংবিধানিক পথ

নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র সাংবিধানিক পথ

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

বিএনপি-জামায়াত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করার জন্য কিলার ভাড়া করে মানুষ হত্যায় মেতেছিলো বলে সংসদে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। মতিয়া চৌধুরী বলেন, ৫ জানুয়ারি সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি অগণতান্ত্রিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আর সেই অগণতান্ত্রিক দল হচ্ছে বিএনপি আর সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াত।

তিনি বলেন, বিএনপি অগণতান্ত্রিকভাবে ক্যান্টমেন্টে একজন জেনারেলের পকেট থেকে জন্ম নেওয়া দল। বিএনপি কখনই গণতান্ত্রিক দল নয়। আর যে দলের জন্ম গণতান্ত্রিকভাবে হয়নি, সেই দল বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন বানচাল করতে আন্দোলনের নামে নৃশংসভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারে, নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করে। পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়াতেও তাদের হাত কাঁপেনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র সাংবিধানিক পথ। অথচ নির্বাচনে না এসে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। ছিনতাইকারী, মাদকাসক্ত ও কিলারদের ভাড়া করে বোমাবাজি, পেট্টোলবোমা ও আগুন দিয়ে মানুষকে হত্যা করেছে। সন্দেশের ওপর কিসমিস বসিয়ে ঘরে বসে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন বিএনপি নেত্রী। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের দিয়ে কখনও আন্দোলনে সফল হওয়া যায় না, তা প্রমাণ হয়েছে। খালেদা জিয়ার মেহমান হেফাজতিরা মেয়েদের অশিক্ষিত রেখে ঘরে বন্দি রাখার ফতোয়া দেন।  জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া কোনো রাখঢাক রাখেননি, এক মন, এক প্রাণ হয়ে তিনি দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।  কিন্তু নির্বাচনে না এসে বিএনপিই বঞ্চিত হয়েছে।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, একজনের ফাঁসির রায়ও কার্যকর হয়েছে। দেশে আজ সকল ক্ষেত্রে অভাবিত উন্নয়ন হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাইলামের একটি মন্তব্যের জবাবে তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদে আল গোর সে দেশের ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়ে জনগণের সমর্থন পাওয়া আল গোর রাষ্ট্রপতি হতে পারেননি। এতে কী জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়েছে? এর কী জবাব দেবেন মাইলাম? আসলে তাদের দেশের ব্যাপারে এক নীতি, আমাদের দেশের বেলায় অন্য নীতি নিয়েই কথা বলেন এসব কূটনীতিকরা।

সন্ত্রাস-দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গিবাদ বর্তমান সরকারের প্রধান শত্রু বলে মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা কঠোরহস্তে এসব দমন করে দেশকে শান্তির নীড়ে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এজন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। কিন্তু বিএনপির বিকৃত মানসিকতার রাজনীতি সে পথে বাধাগ্রস্ত করছে। ছাত্রদলের আপন ভাই হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন শিবির। আর এই দুই সংগঠনের জননী হচ্ছেন খালেদা জিয়া। আরব লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সাধুবাদ ও প্রশংসা করছেন, আর দেশে কিছু কুলাঙ্গার এর বিরোধিতা করছেন!

মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। এ অপশক্তিকে কঠোরহস্তে দমন করতে না পারলে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। খালেদা জিয়ার মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ছিল সন্ত্রাসের রোড মার্চ। সন্ত্রাস করে তিনি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে না এসে এখন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আগামীতে সংবিধান ও গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসবেন, এটাই জাতির প্রত্যাশা। অস্ত্র, দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজনীতি নতুন প্রজন্ম দেখতে চায় না, তারা চায় উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতি।  রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান, টিপু সুলতান প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ