শুক্রবার, মে ২৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়১১১ ভোটকেন্দ্রে আগুন

১১১ ভোটকেন্দ্রে আগুন

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

রোববারের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে দেশের ৩৮ জেলায় ১১১টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।  শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ভস্মীভূত হয় এসব কেন্দ্র। আগুনে পুড়ে যাওয়া এসব কেন্দ্রের সবগুলোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনটির আংশিক আবার কোনটির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। নির্বাচন বানচালে বিএনপি টানা হরতাল, লাগাতার অবরোধ আর মার্চ ফর ডেমোক্রেসির মতো বিরোধী দলের ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়ার কৌশলও নিয়েছে। এদিকে, গাইবান্ধায় দু’টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে ভস্মীভূত করেছে দুর্বৃত্তরা। যেসব জেলার এক বা একাধিক ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ফেনী, নরসিংদী, নীলফামারী, বরিশাল, ঝিনাইদহ, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, লক্ষ্মীপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, ভোলা, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, বাগেরহাট, পিরোজপুর, যশোর, পাবনা, পটুয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরগুনা, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, কুড়িগ্রাম, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ। আমাদের জেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:
ঢাকা : শনিবার ভোর ৬টায় রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দক্ষিণখানের গাওনিয়া হাই স্কুলের ভোট  কেন্দ্রে ভোর ৬টার সময় স্কুলের জানালা দিয়ে একটি কক্ষে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় কয়েকজন হরতাল সমর্থনকারী।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ডেইলি করটিয়া নামক স্থানে ডেইলি করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামক ভোট কেন্দ্র আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সহযোগীতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। এ ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তবে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আর এ ব্যাপারে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা মুঠফোনে জানতে চাওয়া হলে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি। এ ঘটনায় এলাকার ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শেরপুর: শেরপুরের দুটি ভোট কেন্দ্রে শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়ার পর স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলার কারণে বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি। ভোটারদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করার জন্যে শুক্রবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে দূর্বৃত্তরা শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের গনইভরুয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের দরজায় পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। অন্য দরজায়  আগুন দেয়ার চেষ্টা করলেও আগুন ধরেনি।
এদিকে শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের দরজায় পেট্রোল ঢেলে দূর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে সেখানে থাকা নির্মাণ শ্রমিকরা আগুন নেভায়। এদিকে রাতের বেলা উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে আগুন দেয়ার ঘটনার পর থেকে সদরসহ জেলার সর্বত্র যৌথ বাহিনীর টহল আরো জোড়দার করা হয়েছে।

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে গত শুক্রবার রাতে তিনটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র (হাসপাতাল) ও দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুড়ে গেছে। এগুলো হলো- মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় মঙ্গলকান্দি উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্র। চর দরবেশ ইউনিয়নের বাগিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নবাবপুর ইউনিয়নের গুয়ালিয়া গ্রামের অন্নদা চরন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলা পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এনিয়ে গত দুই রাতে ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঁঞা) নির্বাচনী এলাকার ১২২টি ভোট কেন্দ্রের ৮টিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের কথা ছিল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত শুক্রবার রাত একটার পর দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে মঙ্গলকান্দি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি আসবাবপত্র, ওষুধ ও যন্ত্রপাতিসহ  সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে সোনাগাজী থেকে দমকল বাহিনী সেখানে উপস্থিত হয়। কিন্তু তার আগেই কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। গভীর রাতে দুর্বৃত্তের আগুনে চরদরবেশ ইউনিয়নের বাগিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। রাত ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় নবাবপুর ইউনিয়নের গুয়ালিয়া অন্নদা চরণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বছরের বইসহ প্রধান শিক্ষকের কক্ষটি পুড়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে আগুন নেভায়।
সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ চন্দ্র পাল দুর্বৃত্তের আগুনে হাসপাতালটি (স্বাস্থ্যকেন্দ্র) সম্পূর্ণ এবং বিদ্যালয় দুটি আংশিক ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মুরাদনগর(কুমিল্লা): কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে সদর ইউনিয়নের দিলালপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দিবাগত রাত পোনে ১২ টার দিকে এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়,কে বা কারা দিলালপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়  ভোট কেন্দ্রের দরজায় আগুন দেয়। এতে দুটি দরজা পুড়ে যায় তাৎক্ষনিকভাবে এলাকাবাসী আগুন নিভিয়ে ফেলায় এতে কেন্দ্রের বেশি ক্ষতি হয়নি।

ভোলা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্ধারিত ভোট কেন্দ্র সমূহের ৫টি কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ভোলার দৌলতখানে তিনটি, বোরহানউদ্দিনে একটি, ও তজুমদ্দিনে একটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার গভীর রাতে এগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সাথে যড়িত সন্দেহে বিজেপির এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য ভোলার ২টি আসনে মোট ২০০টি আসনের ১৪১টি আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। আগুন দেয়া ভোট কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

আমতলী (বরগুনা): বরগুনার আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয় এবং ওই ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্র মধ্য আরপাঙ্গাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবার ভোর রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। আগুনে দুটি ভবনই আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি-জামাতের কর্মীরা মানিকঝুরি-আরপাঙ্গাশিয়-ঘোপখালী  তারিকাটা-তালতলী সড়কে ৫০টির বেশী গাছ ফেলে চার কিলোমিটার সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এতে ওই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর বিশ্বাস অভিযোগ করেন, আরপঙ্গাশিয়া বাজারে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে এবং মধ্য আরপাঙ্গাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবার ভোর রাতে একদল সশস্ত্র লোক পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়। আগুনে বিদ্যালয় এবং দলীয় কার্যালয়ের বেশ কিছু আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল হক জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেছে। আমতলীর সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ জানান, বিদ্যালয়ভবনটি আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেখানেই ভোট গ্রহন করা হবে।

নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় দুটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ৪৮ ঘন্টার হরতাল ও টানা অবরোধ চলাকালে শনিবার সকালে নাটোর শহরের রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনে আগুন দেয়ার চেষ্টা ও ইটপাটকেল মারার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাবসহ ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া হরতালের সমর্থনে ১৮ দল ও জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাব আহত হওয়ার প্রতিবাদে যুবদল ছাত্রদল মিছিল সমাবেশ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে ষ্টেশন এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকরা মিছিল করে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা ওয়ার্ড বিএনপির একটি অফিস ভাংচুর করে। প্রায় একই বিএনপি কর্মীরা বাবু নামের এক যুবলীগ কর্মীর মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়ে আন্তনগর ট্রেন একতা এক্সপ্রেসের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে ও আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় হরতাল বিরোধী সরকার সমর্থকরা পাল্টা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে ইটের আঘাতে জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাবের মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হলে উত্তেজনা রোধে পুলিশ ১০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকাগুলি ছোড়ে। শরিফ নামে একজনকে সে সময় পুলিশ আটক করে। দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শহরের ফুলবাগানসহ বিভিন্ন স্থানে মিছিল সমাবেশ করেছে যুবদল ও ছাত্রদল।
এদিকে শুক্রবার রাতে সিংড়া উপজেলার কয়াপাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা তবে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়া সিংড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে ৬টি ককটেলের বিষ্ফোরণ ঘটায় দূর্বৃত্তরা। হরতালে নাটোরে সব ধরনের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অফিস আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি একেবারেই কম। শহর ও মহাসড়কে র‌্যাব পুলিশ ও সেনা টহল অব্যাহত রয়েছে জেলার সব গুরুত্বপূর্ণ  মোড়ে মোড়ে বালুর বস্তা দিয়ে বাংকার তৈরী করে সেনা টহল ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবরোধ ও হরতালের সমর্থনে শহরের আলাইপুর, ষ্টেশন ও বড় হরিশপুর এলাকায়  মিছিল সমাবেশ করেছে ১৮ দল।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেছেন, ষ্টেশন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ৯ রাউন্ড গুলি ছোড়ে একজনকে আটকও করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

দিনাজপুর: দিনাজপুর সদর উপজেলায় শুক্রবার রাতে ৩টি এবং শনিবার বেলা ৩টার দিকে সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে (স্কুল) আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র, বইসহ বিভিন্ন স্কুলের সরঞ্জাম পুড়ে যায়।  স্থানীয় জনতার সহায়তায় আগুন নিভেয়েছে পুলিশ। শুক্রবার মধ্যরাতে দিনাজপুর শহরতলীর তফিউদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল, সদর উপজেলার চাঁদগঞ্জ হাই স্কুল এবং বড়ইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়।
আগুনে বড়ইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আসবাবপত্র ও নতুন পাঠ্যবই জাতীয়পতাকা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবিসহ সব মালামাল পুড় ছাঁই হয়ে গেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম জানান, এখানে জানালা ভেঙ্গে কক্ষে আগুন দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার নির্বাচন কর্তৃপক্ষের কাছে ভোট কেন্দ্র হিসাবে হস্তান্তর করার কথা।
আগুনে স্কুলের বেঞ্চ ও চেয়ার পুড়ে যায় তফিউদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল ও চাদগঞ্জ হাই ¯কুল এবং শনিবার বিকালের দেয়া আগুনে স্বারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর স্টোর রুমের আসবাবপত্র পুড়ে যায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চারটি ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিষ্ফোরণ, ট্রাক ভাংচুর  করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতে শহরের খ্রীষ্টিয়ান মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভেতরে ও বাহিরে বেশ কয়েকটি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে। এছাড়া শহরের পাওয়ার হাউজ রোড, টেংকের পাড়, পানির ট্যাংকির এলাকা, কাজীপাড়া, জেল রোড, কাউতলী মোড়ে কমপক্ষে ১৫টি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে। গভীর রাতে সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পয়াগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দেয় দুবৃর্ত্তরা। অগ্নিকান্ডে ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আসবাবপত্র, আলমারী, বই খাতাসহ ৪টি কক্ষ সম্পূর্ণ রূপে ভষ্মীভূত হয়েছে। এলাকাবাসী ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। পুলিশ এবং সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ শফিক নামে এক যুবকে আটক করে। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  আবদুর রব জানান, আতংক সৃষ্টির জন্যেই এ ঘটনা ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এদিকে কুমিল¬া-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পীরবাড়ি এলাকায় ৩টি ট্রাক ও ২টি সিএনজি ভাংচুর করে হরতাল সমর্থকরা। এর মধ্যে একটি ট্রাক নির্বাচনী সরঞ্জাম বহনের কাজে সদর উপজেলার নির্বাচন অফিসে যাচ্ছিল।

দিনাজপুর: দিনাজপুর সদর উপজেলায় শুক্রবার রাতে ৩টি এবং শনিবার বেলা ৩টার দিকে সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে (স্কুল) আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র, বইসহ বিভিন্ন স্কুলের সরঞ্জাম পুড়ে যায়।  স্থানীয় জনতার সহায়তায় আগুন নিভেয়েছে পুলিশ। শুক্রবার মধ্যরাতে দিনাজপুর শহরতলীর তফিউদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল, সদর উপজেলার চাঁদগঞ্জ হাই স্কুল এবং বড়ইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়।
আগুনে বড়ইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আসবাবপত্র ও নতুন পাঠ্যবই জাতীয়পতাকা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবিসহ সব মালামাল পুড় ছাঁই হয়ে গেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম জানান, এখানে জানালা ভেঙ্গে কক্ষে আগুন দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার নির্বাচন কর্তৃপক্ষের কাছে ভোট কেন্দ্র হিসাবে হস্তান্তর করার কথা।
আগুনে স্কুলের বেঞ্চ ও চেয়ার পুড়ে যায় তফিউদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল ও চাদগঞ্জ হাই ¯কুল এবং শনিবার বিকালের দেয়া আগুনে স্বারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর স্টোর রুমের আসবাবপত্র পুড়ে যায়।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম-১ আসনের নাগেশ্বরী উপজেলার ১ টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার ভোর রাতে নাগেশ্¦রীর খামার হাসনাবাদ নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আবু হায়াত মোহাম্মদ রহমতউল্ল্যাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি বিষয়টি অবগত আছেন। ঘটনা পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

লালমোহন (ভোলা): দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরু হওয়ার আগেই ভোলা দুটি নির্বাচনী আসনে উত্তাপ্ত হয়ে উঠেছে। শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে শনিবার দুপুর পযর্ন্ত অন্তত ৬টি কেন্দ্র আগুণ দিয়েছে নির্বাচন বিরোধীরা। এঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১টায় ভোলা- ৩ আসনের লালমোহনের আজাহার রোড এলাকার পূর্ব চর উমেদ ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র আগুণ দেয় নির্বাচন বিরোধীরা। অপরদিকে সকাল ১০টায় তজুমদ্দিনের চাঁদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র  আগুণ দিয়ে পালিয়ে যায় র্দুবৃত্তরা। এছাড়া ভোলা-২ আসনের দৌলখানে ৩ টি ও বোরহাদনউদ্দিনে ১টি সহ একাধিক কেন্দ্রে আগুণ দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।

খুলনা: খুলনার চারটি ভোট কেন্দ্র ও দুইটি ইজিবাইকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া রাত ৮টার পর থেকে নগরীর বিভিন্নস্থানে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরীর বেনীবাবু রোডের বি কে ইউনিয়ন ইন্সটিটিউট স্কুলে দুর্বৃত্তদের
আগুনে পুড়ে গেছে বেশ কিছু নতুন বই। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য বইগুলো শিক্ষক মিলনায়তনে রাখা ছিল। এছাড়া রূপসা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, সুন্দরবন সরকারি আদর্শ কলেজ ও নজরুল নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলায় দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে গেছে বেশ কিছু বেঞ্চ।
রূপসা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিএম মজিবুর রহমান ও সুন্দরবন সরকারি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দীপক কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নগরীর পিটিআই মোড়ে দুইটি ইজিবাইকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুটি পেট্রোল বোমা ও দুটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বোমাবাজি হয়েছে নগরীর ইকবাল নগর, ময়লাপোতা, কেডিএ এ্যাভিনিউ ও শেরে-এ বাংলা রোডে।
খুলনা সদর থানার ওসি শাহাবুদ্দীন আজাদ বলেন, ভোট কেন্দ্রে আগুনের চেষ্টা হয়েছে কিন্তু অগ্নিসংযোগ করা হয়নি। বোমার কোনো শব্দ তিনি শুনেননি বলে জানান।
অপর দিকে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার আমীরপুর ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র কড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শুক্রবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের  কক্ষের জানালা ভেঙ্গে দুর্বৃত্তরা বাঁশের সাহায্যে ভিতরে আগুন ধরিয়ে দিলে বিভিন্ন কাগজ পত্র, বই খাতা ও গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র পুড়ে যায়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ