রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউতত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই - প্রধানমন্ত্রী

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই – প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময় নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য প্রতিটি নির্বাচন প্রমাণ দিয়েছে আগামী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই।

বৃহস্পতিবার গণভবনে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সাথে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় না এলে আফসোস নেই, তবে নির্বাচনে জয়ী হলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখব। তিনি বলেন, জনগণ যদি দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় আনতে চায় তাহলে তার ফল জনগণই ভোগ করবে।

দলের ঐতিহ্য ও সরকারের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি জামায়াতের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি। জিয়া পরিবারের অর্থের উৎস নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের বিরোধীদলীয় নেত্রীর স্বনামধন্য ছেলেদের পাচার করা টাকা, হলমার্ক, ডেসটিনির মতো কেলেঙ্কারির শুরু বিএনপির আমলে। এ সমস্ত বিষয়গুলো যখন আমরা খুঁজে বের করছি, এগুলো দূর করার চেষ্টা করছি, তখন আমাদের অবস্থা হয়ে গেছে-চোর ধরতে গিয়ে চোর হওয়ার মতো।

ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিএনপি জামায়াতের অপপ্রচারের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ইদানিং আবার একটা শুরু করেছে আস্তিক আর নাস্তিক। আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, ফজরের নামাজ পড়ে কোরআন তেলাওয়াত করে আমরা দিন শুরু করি, আর আমরা হয়ে যাই নাস্তিক। আর যিনি ঘুম থেকেই ওঠেন দুপুর ১২টার পড়ে তারা হলো আস্তিক। আর যাবো কোথায়, এর থেকে বেশি আর কিছু আমি বলতে চাই না।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ওই বাড়ি বদলের সময় আপনারা তো বোতল দেখেছেন। যারা বোতল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে, বোতল খেয়ে ঘুমায় ১২টা পর্যন্ত তারা হলো আস্তিক, আর আমরা হলাম নাস্তিক। এটাই দুর্ভাগ্য।

বিগত নির্বাচনগুলোতে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক চেয়েছিলাম, এটা ঠিক। কেন চেয়ছিলাম, কারণ বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যে কয়টা নির্বাচন করেছিল প্রত্যেকটাতে কারচুপি সন্ত্রাস হয়েছে। তারা যদি ভোট কারচুপি না করত, মাগুরা মার্কা ইলেকশন না করত, ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো ইলেকশন না করত তাহলে তো আর তত্ত্বাবধায়কের দাবি করা প্রয়োজন ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আসে, তাহলে তারা নির্বাচনই দেবে না। আর অনেক জ্ঞানী-গুণী, যিনি এক সময় আমাদেরই ছিলেন, ঘর ভেঙ্গে চলে গেছেন, তিনি ফতোয়া দিয়ে দেবেন কোয়ামত পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের তত্ত্বাবধায়ক চাওয়ার পেছনে যুক্তি ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আসার পর যে কয়টা নির্বাচন আমরা করেছি, একটা নির্বাচন নিয়েও তো তারা কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। আগামী নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে বলে আশাবাদী তিনি।

বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সতীশ চন্দ্র রায়, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ সভাপতির সূচনা বক্তব্যের পর তার সভাপতিত্বে রুদ্ধ দ্বার মতবিনিময় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের পিরোজপুর জেলার সাংগঠনিক পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আউয়াল এমপি।

এ সময় জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড.আকরাম হোসেনসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং মহিলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য রাখেন। পরিচালনা করেন দলের উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ