সোমবার, মে ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিআওয়ামী লীগ বিদেশি প্রভূদের উপর নয়, দেশের মানুষের শক্তিতে বলিয়ান : প্রধানমন্ত্রী...

আওয়ামী লীগ বিদেশি প্রভূদের উপর নয়, দেশের মানুষের শক্তিতে বলিয়ান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে উদ্দেশে বলেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না এসে ভুল করেছেন। এখন বিদেশি প্রভূদের কাছে গিয়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করছেন, নালিশ করছেন। পায়ে ধরে এসব কান্নাকাটি বন্ধ করুন। বিদেশিরা আপনাকে ক্ষমতায় আনবে না। আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশি প্রভূদের উপর নয়, দেশের মানুষের শক্তিতে বলিয়ান। দেশের জনগণই আওয়ামী লীগকে বার বার ক্ষমতায় আনে।

“বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানো জন্য বিএনপি নেত্রীর নির্দেশে সারাদেশে ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে নিয়ে হরতাল-অবরোধ করে গাড়িতে পেট্রোল বোমা মেরে সারাদেশে মানুষকে খুন করা হয়েছে। সেখান থেকে শিশুরাও বাদ যায়নি। কিন্তু এতো খুন-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের পরেও নির্বাচন আপনি (খালেদা) ঠেকাতে পারেননি।”

ভোট হয়ে গেছে, জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে। এখন বিদেশি প্রভূদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করছেন। এসব বন্ধ করুন, বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জনতার উদ্দেশে বলেন, এই আওয়ামী লীগই পারবে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের মর্যাদাকে তুলে ধরতে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।

আওয়ামী লীগের ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক আলোচনা সভার তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টায় কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠের মধ্য দিয়ে এ আলোচনা সভা শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৪টা ২৩ মিনিটে সভাস্থলে উপস্থিত হন।

সভার শুরুতেই বাঙালির রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ও আওয়ামী লীগের জন্ম-ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭৫৭ সালে ২৩ জুন পশালীর আম্রকাননে বৃটিশ বেনিয়ারা বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌল্লাহকে পরাজিত করেছিলো তাদের এদেশিয় দোসরদের সহয়তায় এবং এর মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিলো।

“১৯৫০ সালের ঠিক আরেক ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছে স্বাধীনতার জন্য। তারা সেই স্বাধীনতাকে পুনরুদ্ধার করেছিলো। তার মূল কান্ডারি ছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।”

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি তার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসার রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ও এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

২০২১ সালের মধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশ

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন  দেখতেন। আওয়ামী লীগ দেশকে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করে চলেছে। দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলেই সবচেয়ে বেশি ৭ ভাগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যেই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। কিন্তু তার আগেই দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। ইতোমধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয় অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের আর বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হবে না, কারণ আমাদের এখন রিজার্ভ রয়েছে ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ফেরত আসবে সুইস ব্যাংকের টাকাও

শুধু তারেক-কোকোর টাকা নয়, সুইস ব্যাংকের টাকাও দেশে ফেরত আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তার (খালেদা জিয়া) ছেলের পাচার করা টাকা দেশে প্রথম আনতে পেরেছে আওয়ামী লীগ সরকার। সুইস ব্যাংকেও কার কি টাকা আছে সেটা আমরা ফিরিয়ে আনব।

’৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর মানুষ প্রথমে উপলব্ধি করে দেশে জনগণের সরকার এসেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতির রোল মডেল। আমরা আজ পরনির্ভরশীল নয়, আত্মনির্ভরশীল। সবাই বলেছিল পদ্মা সেত‍ু হবে না। আমরা বলেছিলাম হবে। আমরা কাজ শুরু করেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীনতা অর্জনের জন্যই আ.লীগের জন্ম

বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্যই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জন্ম, প্রতিষ্ঠা, সংগ্রাম ও আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালিকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য। পলাশীর আম্রকাননে বাঙালির স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করে সে সূর্যের নবোদয় ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে আওয়ামী লীগই নেতৃত্ব দিয়েছে।

সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ