বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়খালেদার সাথে মজীনার বৈঠক

খালেদার সাথে মজীনার বৈঠক

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পথ বের করাই রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার বিকালে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেড় ঘন্টা বৈঠকের পর লিখিত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা এ কথা বলেন। একইসঙ্গে বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের ঘটনাতেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

মজীনা তার বিবৃতিতে বলেন, এখনই সংলাপে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খোঁজা যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আরো জরুরি হয়ে পড়েছে, তার ওপর বৈঠকে আমি গুরুত্ব আরোপ করেছি। মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ৫মিনিটে মজীনার গাড়ি পুলিশের ঘেরাওয়ের মধ্যে গুলশানে খালেদার বাড়ির সামনে পৌঁছায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। পরে দূতাবাস কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ওই লিখিত বিবৃতি সরবরাহ করা হয়।

তাতে মজীনা বলেন, সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা অগ্রহণযোগ্য। এটা এখনই থামাতে হবে। আমি সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন মজীনা। নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির বিরোধ এবং দেশজুড়ে রাজনৈতিক সহিংসতা চূড়ান্ত মাত্রা পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে সংলাপ ও সমাঝেতার তাগিদ দেয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের শুরুতে দুই দল তিন দফা বৈঠকে বসলেও শেষ পর্যন্ত তাতেও ফল আসেনি। বিএনপির বর্জনের সত্বেও ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর এই নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে নতুন বছরের শুরুর দিন থেকে টানা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। নির্বাচন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ঢাকামুখী অভিযাত্রা ও নয়া পল্টনে সমাবেশের ডাক দেয়ার পর কড়া পুলিশি পাহারায় গত শনিবার থেকে নিজের বাসায় কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।

এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানের ওই বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। আর তার পরদিনই খালেদার সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বৈঠক। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মজীনার কিছুক্ষণ পর তারা ওই বাসায় প্রবেশ করেন। খালেদার বাড়ির সামনে ও গলির মুখে গত শনিবার থেকে পাঁচটি বালির ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাস্তা বন্ধ রাখা হলেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত আসার পর দুটি ট্রাক সরিয়ে জায়গা করে দেয়া হয়। তিনি ফিরে যাওয়ার পর আবার সেগুলো আগের জায়গায় এনে রাখা হয়।

আগের দিন ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাক্ষাতের সময়ও একই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। বিএনপির কর্মসূচির দিনে গত রোববার সুপ্রিম কোর্ট, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মজীনার বিবৃতিতে বলা হয়, আমি মনে করি, এসব ঘটনা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। এসব ঘটনার যেন কোনোভাবে পূনাবৃত্তি না ঘটে।

বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, যারা নিজ গণতান্ত্রিক অধিকার শান্তিপূর্ণভাবে চর্চা করতে চায়, তাদের ওপর এই বিষয়টি ভীতিমূলক প্রভাব ফেলে। দুই পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ সংলাপের সাফল্যের ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। সরকারের দায়িত্ব বিরোধীদলকে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার সুযোগ দেয়া এবং বিরোধী দলের দায়িত্ব এই সুযোগ শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ