বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......নয়াপল্টনে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন

নয়াপল্টনে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহতে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা রবিবারের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিকে ঘিরে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন রয়েছে।

যে কোন ধরণের নাশকতা রোধে প্রশাসনের সদস্যরা সর্তকবস্থানে রয়েছে। কার্যালয় ও আশেপাশের মোড়ে মোড়ে কড়া নজরধারী করছেন প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। এছাড়া সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশীর পাশাপাশি সাথে থাকা ব্যাগও তল্লাশী চালাচ্ছে তারা। এছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের কাজে ব্যবহৃত রায়টকার, জলকামান ও প্রিজন ভ্যান। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিকে সামনে রেখে কমলাপুর রেলষ্টেশন থেকে শুরু করে পল্টন মোড় পর্যন্ত পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, ১৮ দলীয় জোটের কোন নেতাকর্মীকে নয়াপল্টনের কার্যালয়ের আশে পাসে আসতে দেখা যায়নি। কর্মসূচিকে ঘিরে দলীয় কর্মীদের কোন ধরনের তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। বিএনপির যগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ গত ৩০ নভেম্বর গ্রেফতারের পর এ কার্যালয়ে বিএনপি কিংবা জোটের কোন নেতাকর্মীকে আসতে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই )মেহেদী মাকসুদ জানান, ‘১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয় এবং আশপাসের এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করার হয়েছে। তবে কয়েকদিনে এসব এলাকায় কোন মিছিল ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।’

এদিকে রাজধানী জুড়ে বড় ধরণের নাশকতার আশঙ্কায় সর্তক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।রবিবার ১৮ দলের ঘোষিত ‘মার্চ ফর ডেমোক্রোস’ কর্মসূচিকে ঘিরে এই নাশকতা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ধারণা করছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর জন্য একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। এরমধ্যে জামায়াত-শিবিরের সদস্যরাও রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভাঙ্গতে ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এমন পরিকল্পনা নাশকতাকারীদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইতিমধ্যে তারা সুবিধামতো স্থানে অবস্থান নিয়েছে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, রাজধানী বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩০ হাজারের বেশী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা আরও ৪-৫ হাজার বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুলিশের সাথে র‌্যাব ও বিজিবিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাদা পোশাকধারী সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র যুগ্ম-কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, ১৮ দলের কর্মসূচিকে সামনে রেখে বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কায় রয়েছি আমরা। যেকোনো ধরনের নাশকতা রুখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে।

এ ব্যাপারে ডিএমপির তথ্য ও জনসংযোগ শাখার উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, রাজধানীতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি গুরুর্ত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকধারী পুলিশ সদস্য, র‌্যাব ও বিজিবি টহল দিচ্ছে। রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশী চালানো হচ্ছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ইউয়িং কমান্ডার এটিএম হবিবুর রহমান জানান, ‘র‌্যাব সার্বক্ষণিক নাশকতা রুখতে কাজ করে যাচ্ছে। রবিবার ১৮ দলের কর্মসূচি ঘিরে আড়াই হাজার র‌্যাব সদস্য রাজধানীতে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। বোমডিসপোজাল ইউনিট ও ডগস্কোয়াডও মাঠে থাকবে। এছাড়াও হেলিকপ্টার স্টান্ডবাই রাখা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিরোধীনেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ কর্মসূচির নাম দেন ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’।

মূলত আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করতেই ১৮ দলীয় জোটের এ কর্মসূচি। কিন্তু ওই কর্মসূচি পালনে তাদের অনুমতি দেয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি। তারা নগর ও নগরবাসীর নিরাপত্তার কারণে অনুমতি দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। আজ অতিরিক্ত আইজিপি বলেছেন, কাউকে রাজধানীতে ঢুকতে দেয়া হবে না।

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোন মূল্যে তারা নয়পল্টনে গণজমায়েত করবে। সেজন্য গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় দলের চেয়ারপার্সন সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে আমি না থাকতে পারলেও আপনার গণতন্ত্র রক্ষার কর্মসূচি সফল করুন।’

অন্যদিকে রাজধানীর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলাচলেও বেশ সিডিউল বিশৃঙ্খলতা রয়েছে। তবে বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকারের বাঁধার কারণেই লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ