আগামী অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের রাজনৈতিক অবস্থার উপর অর্থনীতির বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নির্ভর করবে বলে জানানো হয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা -সিপিডির পক্ষ থেকে। অন্যদিকে সংস্থাটির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, শুধুমাত্র দেশীয় অর্থায়নের মাধ্যমে বছর বছর টাকা বরাদ্দ দিয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকারের সাড়ে চার বছরে, বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় ছিল মোট জনগোষ্ঠীর ৪৩ ভাগ, বর্তমানে বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে ৬০ শতাংশ মানুষ। পাশাপাশি ইতিবাচক ধারা রয়েছে সরকারি বিনিয়োগেও। এমনকি বার্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রকল্প বাস্তবায়নের হারও এর আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তবে মুদ্রার উল্টো পিঠও রয়েছে। গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম অভ্যন্তরীণ সঞ্চয়ের হার। খেলাপী ঋণের পরিমাণ গত ৫ বছরে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌছেছে। আর ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ কমে গত ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। সোমবার সিপিডির সামগ্রিক অর্থনীতির ২য় পর্যায়ের বিশ্লেষণের ওপর করা সংবাদ সম্মেলনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি মূল্য থেকে ৭ ও ৮ শতাংশে উন্নীত হওয়া সম্ভব হবে না। যা কিনা ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আর যদি নির্বাচন ইতিবাচক পরিবেশে হয় তবে প্রবৃদ্ধি হবে, নইলে অর্থনীতিকে বিরাট মাশুল গুনতে হবে। বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় শঙ্কিত সিপিডির অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেছেন, বিভিন্ন মেয়াদী অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন শেষ পর্যন্ত নির্ভর করছে রাজনীতিবিদদের উপরই। অর্থনীতি বিশ্লেষণ শেষে পদ্মাসেতু নির্মাণ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন সংস্থাটির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে কিস্তিভিত্তিক টাকা বরাদ্দ দিয়ে সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। একসাথে বৈদেশিক মুদ্রার সকল টাকা যদি একত্রে না আসে তবে বড় বড় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সেতু নির্মাণ করতে আগ্রহী হবে না। আর তাই সেতু তৈরিতে অর্থায়ন পরিকল্পনা আবারও নতুন করে শুরু করা উচিত।