শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাশের আহ্বান...

ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাশের আহ্বান জানিয়েছেন আল্লামা শফী

ন্যাশনাল ডেস্কঃ (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

উলামা-মাশায়েখ, ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্র ও ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র বন্ধ করে সংসদের চলতি অধিবেশনেই সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের ধারা পূন:স্থাপন এবং আল্লাহ-রাসূলের অবমাননা ও ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িত নাস্তিক-মুরতাদদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাশের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

বৃহস্পতিবার ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার হেফাজতে ইসলামের ২৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল হেফাজত আমীরের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হলে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম, মাদ্রাসা শিক্ষক, ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সামনে সরকারের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।  হেফাজতের প্রচার সচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আহমদ শফী বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ঈমান-আক্বীদা ভিত্তিক ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়নের মাধ্যমে তৌহিদী জনতার দানাবাঁধা ক্ষোভ প্রশমনের সুযোগ এখনো সরকারের হাতে রয়েছে। বর্তমানে সংসদের অধিবেশন চলছে। ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের আস্ফালন ও ইসলাম বিরোধী সকল অপতৎপরতা বন্ধ এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে সংসদের চলতি অধিবেশনেই আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের ধারা পূণ:স্থাপন এবং আল্লাহ-রাসূলের অবমাননা ও ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িত নাস্তিক-মুরতাদদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে খুব সহজেই আইন পাশ করা যায়।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কোন কোন মন্ত্রী এমপি ও কর্তাব্যক্তিদেরকে প্রায়ই ওলামা-মাশায়েখ, ক্বওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষককে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস ও কথিত জঙ্গিবাদের সাথে জড়িয়ে নানা মিথ্যা অপবাদ দিতে শোনা যায়। সরাসরি জনগণের সম্পৃক্ততায় পরিচালিত কুরআন-হাদীসের জ্ঞান অর্জনের শিক্ষাকেন্দ্র ক্বওমী মাদ্রাসার বিরুদ্ধেও নানা বিষোদগার করতে দেখা যায়।

তিনি বলেন, এসব অপবাদ ও মিথ্যা প্রচার এখন জনগণ বিশ্বাস করে না। বিগত ৫ মে শাপলা চত্বরের এত বড় জুলুম-অত্যাচার ও হতাহতের শিকার হওয়ার পরও ওলামা-মাশায়েখ ও মাদ্রাসার ছাত্ররা প্রতিশোধমূলক কোনরূপ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখে কি পরিমাণ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, তা বিশ্ববাসী দেখেছে। হেফাজতের চলমান অরাজনৈতিক আন্দোলনেও ক্বওমী আলেমরা কতটা সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধরে রেখেছেন, তাও দেশবাসী জানে।

শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, বিগত ৫ ও ৬ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালানো হয়েছে, বায়তুল মুকাররম ও এর আশপাশের এলাকায় শত শত কুরআন পোড়ানোসহ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, সড়কের শত শত গাছ কাটা হয়েছে, ৬ মে নারায়ণগঞ্জ, হাটহাজারীসহ দেশের আরো বিভিন্ন স্থানে আলেম ও নিরীহ তৌহিদী জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এত ভয়াবহ ঘটনার নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্ত করার জন্য আমরা সরকারের কাছে বার বার দাবী জানিয়ে আসছি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির কথা বলেছিলেন। অথচ সরকার এই ন্যায্য দাবীর ব্যাপারে কোনরূপ পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টা উলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে জেল-জুলুম, মিথ্যা মামলাসহ দমন-পীড়ন ও মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে। মুফতী ওয়াক্কাসসহ দেশ বরেণ্য অনেক আলেমকে হয়রানীর শিকার করা হলেও আল্লাহ-রাসূল অবমাননাকারী নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। একটা মুসলিম অধ্যুষিত দেশে এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ডাকে অনুষ্ঠিত স্মরণকালের বৃহৎ লংমার্চ ও ঢাকা অবরোধ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, এদেশের মানুষ কখনো ইসলাম বিদ্বেষী মতবাদ পোষণকারী ও নাস্তিক্যবাদের সহায়কদেরকে কখনো মেনে নেবে না।

হেফাজত আমীর নাস্তিক্যবাদের সহায়ক বিশেষ একটি মহল থেকে হেফাজতে ইসলামকে নারী বিদ্বেষী বলে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, এর চেয়ে জঘন্য মিথ্যাচার কিছুই হতে পারে না। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবীর চতুর্থ দফা নারীদের মর্যাদা ও অধিকারের সুরক্ষার জন্যই রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানী থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ ও হিজাব পালনে উদ্বুদ্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

হেফাজতে ইসলাম ছাগলনাইয়া উপজেলা সভাপতি আবু তাহের মজুমদারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন, সহ-সভাপতি মুফতী মাহবুবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা শহিদুল্লাহ, আলহাজ্ব আলিমুল্লাহ, মাওলানা আবু বকর পাটোয়ারী, সেক্রেটারি মুফতী শোয়াইব, হাফেজ আহমদ মাসুদ, মাওলানা আব্দুল হালিম কাসেমী, মাওলানা নূরুন্নবী, মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা আইয়ুব, মাওলানা শহীদুল্লাহ, মাওলানা জাফর, মাওলানা নূরুল আলম প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ