শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়রাজশাহীর জনসভায়ও নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজশাহীর জনসভায়ও নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সাদ আল আলম, বাগমারা, রাজশাহী থেকে (বিডিসময়২৪ডটকম)

রাজশাহীর বাগমারার জনসভায়ও নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ কিছু পায়। মানুষ সুখে শান্তিতে থাকে, উন্নয়ন হয়, ভাতা পায়। মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারে। তাই আগামীতেও নৌকা মার্কায় ভোট দিলে শান্তি পাবেন, উন্নয়ন পাবেন ও সুখী সমৃদ্ধ একটি দেশ পাবেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দেউলায় এনাপার্ক মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় যায় তখন জনগণ আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়। আর যখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে তখন জনগণ সারাক্ষণ উদ্বেগের মধ্যে থাকে। কারণ বিএনপি মানেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ, বিএনপি মানেই দুর্নীতি। সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করাই তাদের চরিত্র।

প্রধানমন্ত্রী বাগমারার জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের ভোট বিফলে যায়নি। আপনারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলেন বলেই আজ নিরাপদে শান্তিতে ঘুমাতে পারেন। আমরাই বাগমারার রক্তাক্ত জনপদকে শান্তি ও উন্নয়নের জনপদে রূপ দিয়েছি। যেখানে বিএনপি-জামায়াত সরকারের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকসহ অন্যরা বাংলাভাইয়ের উত্থান ঘটিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো। সেই জনপদ এখন শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র ১০টাকা দিয়ে কৃষকরা এখন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে।আমরা সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কৃষকদের ভূর্তুকির টাকা সরাসরি দেই। আমরা কৃষকদের কাজ দিয়েছি। বিশেষ করে বর্গাচাষীরা বিনা জামানতে ব্যাংক ঋণ নিতে পারেন। সেই ব্যবস্থাও ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় ছিলাম আমরাই করে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অথচ বিএনপি সরকারের আমলে সারের জন্য ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো। আর আওয়ামী লীগের আমলে সারের দাম এখন দফায় দফায় কমছে। মাত্র কয়েক দিন আগে আমরা ইউরিয়া সারের দাম কমিয়েছে।

জনকল্যাণমুখি নানা প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বৃদ্ধদের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবাদের জন্য বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছি।ছেলে মেয়েদের শিক্ষার জন্য বিনামূল্যে মাধ্যমিক পর্যন্ত বই দিয়েছি, বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি চায় না এই দেশের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখুক। কারণ বিএনপির নেত্রী নিজেই ‘ম্যাট্রিকে’ দুই সাবজেক্টে পাস করেছেন। তাও আবার ঊর্দ্দু ও অংকে। তাই উনার মনে এখনও সেই পেয়ারের পাকিস্তান। আর অংকে ভালো থাকায় দুর্নীতির টাকার হিসাব উনি ভালো রাখতে পারেন।

বিএনপির কাজ মিথ্যা বলা আর ভাওতাবাজি করা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  তারা দেশের ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়, মাদক তুলে দেয়। তারা ছেলেদের সন্ত্রাসী বানায় আর আমরা তাদের হাতে বই তুলে দিয়ে লেখাপড়া শেখাই। এখানেই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোটের সাথে আমাদের তফাৎ।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজ হচ্ছে দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর আমাদের কাজ হচ্ছে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আগে একজন দিনমজুর যে টাকা রোজগার করতো তা দিয়ে দুই কেজি চাল কিনতে পারতো না। আজকে আমাদের আমলে একজন দিনমজুর যা রোজগার করেন তা দিয়ে ৮-১০ কেজি চাল কিনতে পারেন। আমরা মাথা পিছু আয় বাড়িয়েছি ১ হাজার ৪৪ মার্কিন ডলারে।

সম্প্রতিকালের হেফাজতি তাণ্ডবের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট হেফাজত ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদে শত শত কোরআন পুড়িয়েছে। সারা পৃথিবীর ইতিহাসে এতো কোরআন পোড়ানোর ঘটনা আর নেই। যারা কোরআন পোড়ায় তারা কি করে ইসলামের হেফাজত করতে পারে প্রশ্ন রাখেন তিনি। তারা ধর্মের নামে মিথ্যা অপ্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য জনগণের কাছে আরো একবার নৌকা মার্কায় ভোট চান।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বাগমারা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এতে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

জনসভার আগে প্রধানমন্ত্রী বাগমারায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্স উদ্বোধনসহ রাজশাহী মহানগরীসহ ৯টি উপজেলার ৩৮টি বিভিন্ন স্থাপনার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। সকাল ১০টার দিকে তিনি রাজশাহী পৌঁছান। রাজশাহী সেনানিবাসে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ