শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

দেশে কার্যরত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া যায়। ২০১৩-২০১৪ সালে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের দেওয়া অভিযোগ ও নিষ্পত্তি নিয়ে এ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট প্রাপ্ত অভিযোগের ৫৫ দশমিক ৫২শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে। আর সরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধে রয়েছে ২৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধেও ৬ দশমিক ৮৯শতাংশ অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। বিদেশি ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ৪ দশমিক ০৯ শতাংশ অভিযোগ আছে। আর তফসিলি ব্যাংক ছাড়া অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৭ দশমিক ৫৩শতাংশ অভিযোগ আছে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অভিযোগের ঘটনায় হতাশা প্রতাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে অভিযোগের শীর্ষে রয়েছে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। ২০১৩-১৪ সালে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে ২৯১টি। জনতা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৮৬টি আর অগ্রণী ব্যাংকের এসেছে বিরুদ্ধে ১৮৫টি।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে অভিযোগ বেশি এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রাইম ব্যাংকের বিরুদ্ধে এসেছে ১৪৬টি, ব্র্যাক ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৩৫টি। গ্রাহকের অভিযোগ রয়েছে, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে। ওই অর্থ বছরে দেশের সব ব্যাংকের বিরুদ্ধে ফোনে, ই-মেইলে এবং লিখিতভাবে ৪ হাজার ৪৭৬টি অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এরমধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ৯৫ দশমিক ৮৭শতাংশ। এর আগে ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে ৪ হাজার ২৯৬টি অভিযোগ এসেছে। এরমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৬৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে অভিযোগের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ ছিল সাধারণ ব্যাংকিং নিয়ে।  বাকি অভিযোগগুলো ছিল ঋণ ও অগ্রিম, এটিএম কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং এবং ট্রেড বিল, রেমিটেন্স ও অন্যান্য বিষয়ে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ব্যাংকের ১৮৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরমধ্যে ১৮জন মহা-ব্যবস্থাপকসহ আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও রয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করে সমাধান পাওয়া সফটওয়্যার ব্যবসায়ী ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের গ্রাহক এএসম জাহিদ হোসেন এবং আমদানী রফতানি ব্যবসায়ী সিটি ব্যাংকের গ্রাহক ওবায়দুর রহমান তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বার্ষিক প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুর চৌধুরী, ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখার, নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ