মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিবিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের ‘অধীনে’ চলে গেছে

বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের ‘অধীনে’ চলে গেছে

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিলে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করায় বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের ‘অধীনে’ চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শেষে সোমবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ‘অবৈধ’ সরকারের এই সংসদে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসন বা অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেওয়ার অর্থই হলো তা আওয়ামী লীগের হাতে ফিরিয়ে নেওয়া। আমরা মনে করি রাষ্ট্রপতি ষোড়শ সংশোধনী বিলে সই করায় বিচার বিভাগ এখন আওয়ামী লীগের ‘অধীনে’ চলে গেলো। সরকার পুনরায় একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশের বিজ্ঞ আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, বিশিষ্ট রাজনীতিকসহ সমগ্র দেশবাসী দ্বিমত পোষণ করেছেন এবং সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।  তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিজেদের হাতে নিয়ে গেছে। সর্বশেষ ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে তারা বিচার বিভাগকে নিজেদের অধীনে নিয়ে একদলীয় শাসান ব্যবস্থা কায়েমের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি ‌উচ্চারণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের ম্যানডেটবিহীন সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। অন্যথায় জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে দখলদার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোমবারের হরতাল শতভাগ সফল হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করেছে। তারপরও সরকারের পেটোয়া বাহিনী তাদের ওপর হামলা  ও নির্যাতন চালিয়েছে। দেশব্যাপী অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়েছে। হরতাল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রোববার বিকাল থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ৩৫৩ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার ও ৩২ জনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

১৮০ জন প্রতিনিধি নিয়ে জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমার জানা মতে অতীতে কোনো দিন এত বড় বহর নিয়ে বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান জাতিসংঘ সফরে যাননি।

ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে তার পরিবারে সদস্য এবং ৯ জন মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের স্ত্রীরাও গেছেন। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সনদধারী একজন সচিবও প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়েছেন। জাতিসংঘের অধিবেশনে এত বড় বহর নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এর ভেতর দিয়ে অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ও ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোহম্মদ শাজাহান, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদূল করিম শাহীন, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরী আরা সাফা, ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ