সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েচট্টগ্রাম বিভাগগ্রামমুখী জনস্রোত এখন শহরমুখী, নানা ভোগান্তি

গ্রামমুখী জনস্রোত এখন শহরমুখী, নানা ভোগান্তি

নানা ভোগান্তি মাড়িয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কর্মব্যস্ত মানুষ। পরিবার পরিজনের সঙ্গে কাটানো আনন্দময় মুহূর্ত ভুলিয়ে দিয়েছে সব কষ্ট। হাসি খুশিতেই কেটেছে ঈদের ছুটি। দেখতে দেখতেই কেটে গেল ঈদের ছুটি। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে গ্রাম থেকে বন্দর নগরীতে ফিরছে মানুষ। ঈদের আগের গ্রামমুখী জনস্রোত এখন পুরোটাই শহরমুখী। ফলে শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও  রেল স্টেশন শহরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। এক্ষেত্রেও নানা ধরণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ যেমন বন্দরনগরীতে ফিরছে তেমনি ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নগরী ছাড়ছেন অনেকে। আর যারা নানা কারণে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে পারেনি তাদের রেল ও বাস স্টেশনে ভিড় করতে দেখা গেছে। মাঝখানে শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় অনেকেই বৃহস্পতিবার একদিন বাড়তি ছুটি নিয়েছেন। ফলে শুক্রবারে চাপ একটু বেড়েছে। ফিরে আসছে নগরীর চিরচেনা সেই রূপ।

তবে ভোগান্তি পিছু ছাড়েনি মানুষের। নগরীর বিভিন্ন স্থানে শহরে আসা মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে উপলক্ষে শহর-গ্রাম কোথাও নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি। পরিবহন মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন অনেকটা জোর করেই। তাদের অভিযোগ পরিবহন সেক্টরের সর্বত্রই নৈরাজ্য। সংশ্লিষ্ট পরিবহন মালিকদের নীরব সমর্থন রয়েছে এতে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা এ নৈরাজ্যে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। মাঝখানে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ জনগণের।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উত্তর চট্টগ্রামের রাউজান, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও দুই পার্বত্য জেলার বাসষ্টেশন অক্সিজেন,দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাত উপজেলাসহ পর্যটননগরী কক্সবাজারের বাসষ্টেশন শাহ আমানত ব্রীজ এলাকায় স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভীড়। সাধারণ যাত্রীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও জোর পূর্বক আদায় করে নিচ্ছে।

হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, নাজিরহাট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত জনপ্রতি বাস ভাড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু ঈদের নামে ৭০ থেকে ৮০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ৬০ থেকে ৭০ টকার স্থলে সিএনজি অটো রিকসা ভাড়া আদায় করছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

অপরদিকে লোহাগাড়া থেকে নগরী পর্যন্ত লোকাল বাস ভাড়া ১০০ টাকার স্থলে ১২০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। লোকাল বাসে নতুন ব্রিজ থেকে বাঁশখালী পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাড়া ৪৫ টাকা হলেও কোন কোন বাসে ৬০ টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আবদুল্লাহ নামে এক যাত্রী  জানান, বাসে নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাড়া ২০ টাকা হলেও এখন নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা। কারো কাছ থেকে এ ভাড়া  ৫০ থেকে ৬০ টাকাও আদায় করা হচ্ছে। শুধু গ্রাম থেকে ফেরা মানুষকে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে তা নয়। যারা নগরীতে ঈদ কাটিয়েছেন তাদেরকেও গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। বিশেষ করে সিএনজি চালিক অটো রিকসা। আলকরণ থেকে মুরাদপুরের ভাড়া ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কিন্তু শুক্রবার দাবি করছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

সাধারণত শাহ আমানত ব্রিজসংলগ্ন মইজ্যার টেক থেকে আন্দরকিল্লা পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া নেয়া হয় ১৫০ টাকা। কিন্তু শুক্রবার এ ভাড়া ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। তবে অতিরিক্ত  ভাড়া আদায়ের বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন আন্ত:জেলা বাস মালিক সমিতির চট্টগ্রাম জেলার মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু। তিনি  বলেন, কোন কোন চালক হয়তো ৫/১০ টাকা বেশী আদায় করতে। তবে দ্বিগুন বা তিনগুণ ভাড়া আদায়ের কথাটি ঠিক নয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ