শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়প্রবাসীদের অবহেলা কিংবা অপমান সহ্য করবো না : প্রধানমন্ত্রী

প্রবাসীদের অবহেলা কিংবা অপমান সহ্য করবো না : প্রধানমন্ত্রী

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা ‘অপমান ও অবহেলার’ শিকার হলে তা সহ্য করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার দেশের মানুষ অন্য দেশে গিয়ে অবহেলার শিকার কিংবা অপমানিত হবেন, এটা অনেকে সহ্য করতে পারলেও আমি পারবো না।” বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের কর্মক্ষেত্রে ‘উপার্জন ও মর্যাদা’ বৃদ্ধিতে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “পাশের হারে প্রতিবেশি দেশের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে হবে।” মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রায় ৮৭ লাখ শ্রমিক কাজ করেন, যাদের অধিকাংশই কারিগরিভাবে ‘অদক্ষ’ শ্রমিক। তাই তাদের আয়ও তুলনামুলকভাবে কম।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “একজন স্কুল মাস্টার, উনি হয়তো বিদেশে চলে গেছেন। কিন্তু উনাকে সেখানে গিয়ে কি কাজ করতে হচ্ছে? তাকে হয়তো দোকানির কাজ করতে হচ্ছে। অথবা আমাদের ছেলেদের দেখেছি, কোনো কোনো দেশে গিয়ে রাস্তায় ময়লা কুড়োচ্ছে।” এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি শিক্ষার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “কিন্তু এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে কে কোথায় যাবে, কোন ধরনের শিক্ষা নেবে, কী ধরনের ট্রেনিং দরকার- আমরা এখন সেগুলো দিয়ে দিচ্ছি।”

তিনি বলেন, “এইটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষতা নিয়ে যদি কেউ যায়, তাহলে অধিক অর্থ উপার্জন করতে পারবে, কর্মক্ষেত্রে তাদেরে একটা গুরুত্ব থাকবে। অবহেলার শিকার হবেন না, কেউ তাদের অবহেলা করতে পারবে না।”

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন মানবসম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে বাংলাদেশকেও সুইজারল্যান্ডের মতো উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, “জাতির জনক সবসময় বলতেন, বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে। সুইজারল্যান্ডই হচ্ছে পরিপূর্ণ, সব থেকে শান্তিপূর্ণ দেশ, সব থেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী দেশ। তারাও ধীরে ধীরেই নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলেছে।

“কাজেই আমরা সেভাবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারবো। ভৌগোলিক দিক থেকে হয়তো আমাদের ভূখণ্ড এতো বড় না, কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বিশাল। আমাদের দেশের এই মানুষগুলোকে যদি গড়ে তুলতে পারি তাহলে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে? কেন অন্যের কাছে হাত পেতে চলবে? কেন আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারব না?” তবে এজন্য শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। আমরা সবসময় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করি।” এসময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার তিন আমলে কারিগরি শিক্ষা কারিকুলামের আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি শিক্ষা বাড়ানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যে পাসের হার ৪০ থেকে ৪৫ ভাগ হতো, সেটা এখন ৯২ ভাগের ওপরে পৌঁছেছে। আরো অনেক দুর যেতে চাই আমরা। পাশের দেশে ৯৮ দশমিক ৮ ভাগ পাস করে। প্রতিবেশি দেশে যদি এতো পাস করে, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পারবে না কেন? আমি তো মনে করি আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনেক বেশি মেধাবী।”

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি আগে আগ্রহ না থাকলেও সরকারের নানা ধরনের চেষ্টায় এই শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।” গত পাঁচ বছরে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা আট গুণ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ