সোমবার, মে ৬, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমঝোতা জরুরি

বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমঝোতা জরুরি

বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতিতে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার বাজেটকে সামগ্রিক বিবেচনায় স্বাগত জানালেও তা বাস্তবায়ন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। ২০১৪-১৫  অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ৬৭ হাজার ৫৫২ কোটি টাকার ঘাটতি পূরণ ও বাজেট বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, এত বড় বাজেট বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। বিশাল এ বাজেট বাস্তবায়ন করতে সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমঝোতা আনা জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

ভোগ্য পণ্যের লোকাল এলসিতে উৎসে কর প্রত্যাহার করায় এ সংক্রান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষিখাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী এবং যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দেয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা ও নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করছেন তিনি।

নতুন করদাতা সৃষ্টি করা না গেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে প্রায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণের চাপ দেশের সাধারণ জনগনের উপরই পড়বে বলে মনে করছেন খলিলুর রহমান। এজন্য নতুন করদাতা সৃষ্টির জন্য যথাযথ পদক্ষেণ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। এছড়া বিদ্যমান কর দাতাদের উপর যে অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়েছে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি তিনি।

রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে সরকারের নগদ সহায়তার উপর উৎসে কর কর্তনের হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা, ঔষধ, সিরামিকস্, কাগজ, গ্লাস, রাবার, ফার্নিচার, ইলেকট্রিক্যাল ও প্লাষ্টিক শিল্পের কাঁচামাল আমদানি শুল্ক হ্রাস করায় দেশীয় শিল্পের প্রসার ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন চিটাগাং চেম্বার সভাপতি।

অন্যদিকে ১৫-১৬ ইঞ্চি রিম সাইজের বাসের টায়ারের আমদানিতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ রেগুলেটরী ডিউটি এবং বাইসাইকেল টিউব আমদানি শুল্ক অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তৈরী পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর শূণ্য দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূণ্য দশমিক ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। একই সাথে অন্যান্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

অপরিশোধিত ও পরিশোধিত সয়াবিন, অপরিশোধিত পাম তেল ও পরিশোধিত সূর্যমূখী তেলের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে বিদ্যমান ১০ শতাংশ রেয়াতি সুবিধা ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয় বাজেটে। এতে ভোজ্য তেলের মূল্য স্থিতিশীল ও জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সহায়ক হবে।

এদিকে বর্তমানে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত সব ধরনের সিডান কারে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সহ সর্বমোট কর ভার ১৩২ শতাংশ রয়েছে। এই স্ল্যাবে শুল্ককরের হারে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় মূল্যমানে কোন হের-ফের হচ্ছে না বলে মনে করছে বারবিডা।

প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫০১ সিসি থেকে ১৭৫০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ এবং ১৭৫১ সিসি থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কসহ ২১৮ শতাংশ ও ২৯৫ শতাংশ শুল্ক কর বিদ্যমান।

এই দুই স্ল্যাবে গত ৪ বছর ধরে অস্বাভাবিক হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ থাকায় ১৮০০ ও ২০০০ সিসি’র কোন সিডান কার এবং জীপ আমদানী হয়নি বলে জানান বারবিডার সেক্রেটারি মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর।

তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দীর্ঘদিনের এই অচলাবস্থা নিরসনে ১৫০১- ২০০০ সিসি পর্যন্ত একটি স্ল্যাব করে ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ করায় সর্বমোট করভার দাঁড়িয়েছে ২১৮ শতাংশ। এর ফলে ১৮০০-২০০০ সিসি’র গাড়ি ব্যবহারে আগ্রহী ক্রেতারা সামর্থ্যরে মধ্যে এসব যানবাহন ক্রয় করতে পারবেন।

তবে মাইক্রোবাস আমদানীর উপর কখনো সম্পূরক শুল্ক না থাকলেও হঠাৎ করে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। রিকন্ডিশন্ড হাইব্রীড গাড়ি আমদানীর অনুমতি দিয়ে সরকার সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাড়ি ব্যাবহারের পথ উম্মুক্ত করবেন  বলে আশা প্রকাশ করেছেন মাহবুবুল হক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ