শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়তিস্তা পানি চুক্তি ও সীমান্ত সমস্যার বিষয়ই আলোচিত, শিগগির বাংলাদেশ সফর

তিস্তা পানি চুক্তি ও সীমান্ত সমস্যার বিষয়ই আলোচিত, শিগগির বাংলাদেশ সফর

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

তিস্তা পানি চুক্তি ও সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর প্রথম কাজের দিনেই তা অনুধাবন করলেন। আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এ দুই বিষয়ই উত্থাপন করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হয়ে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দিল্লি এসেছেন স্পিকার।বৈঠকের পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী  জানান, দুটি বিষয়ই ‘সক্রিয়ভাবে বিবেচনা’ করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে বলেছেন। বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে মোদি বলেছেন, শিগগিরই তিনি বাংলাদেশে যেতে চান। মোদিকে শিরীন বলেছেন, তাঁরা চান সার্ক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তাঁর প্রথম সফর বাংলাদেশেই হোক।মোদির সঙ্গে স্পিকারের বৈঠক প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলে। বৈঠকের শুরুতেই মোদির হাতে স্পিকার তুলে দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা চিঠি। চিঠিতে মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে সার্বিক দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা। দুই দেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান উল্লেখ করে হাসিনা বলেছেন, দুই দেশ একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কাজেই পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলির মোকাবিলা একযোগে হলে দুই দেশই উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। শিরীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে প্রভূত অভিনন্দন জানিয়ে বলেছি, সার্ক সদস্য দেশগুলির বিকাশের জন্য এই আমন্ত্রণ এক প্রবল বার্তা। অভূতপূর্ব পদক্ষেপ। সার্কের পরিসরেই আমাদের ভাগ্য জড়িয়ে রয়েছে।’অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দুই দেশ যে যে ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করছে, স্পিকার সেগুলোর উল্লেখ করে বলেন, যোগাযোগ, নিরাপত্তা, বিদ্যুত্ ও শক্তি, পরিবেশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকা জরুরি বলে দুজনেই মনে করেছেন। শিরীন শারমীন বলেন, এই আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ। এই সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদিও বলেছেন বলে স্পিকার জানান।

বাংলাদেশের স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা যে খুবই সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে হয়েছে এবং এই বৈঠক যে ফলপ্রসূ, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংও তা স্বীকার করেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব  জানিয়েছেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গটি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে বলেছেন, দুটি বিষয়ই তিনি দেখবেন। নির্বাচনী প্রচারে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গটি মোদি তুলেছিলেন। বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠেছিল কি না, জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সীমান্ত সমস্যা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়ই আলোচিত হয়েছে। কিন্তু আলোচনার খুঁটিনাটি নিয়ে তিনি মন্তব্য করেননি।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিং সার্ক দেশগুলির মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই দ্বিপক্ষীয় সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সফরে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করাও তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই দুই ব্যর্থতার কারণ যতটা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির একরোখা মনোভাব, ততটাই দায়ী বিজেপি। প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের স্পিকারকে আশ্বাস দিলেও ওই দুই চুক্তি কি তিনি বাস্তবায়ন করতে পারবেন? মোদির সঙ্গে কথা বলে স্পিকারের মনে হয়েছে তাঁরা আশাবাদী হতেই পারেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ