রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়তিস্তা অভিমুখে বিএনপির লংমার্চ শুরু

তিস্তা অভিমুখে বিএনপির লংমার্চ শুরু

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা অভিমুখে বিএনপির লংমার্চ শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই লংমার্চ সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এর উদ্দেশ্য মানুষকে সচেতন করা, যেন তারা ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আরও জোরালো অবস্থান নিতে পারে।’
আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা ৫৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর উত্তরা দিয়ে দুদিনের এই কর্মসূচি শুরু হয়। উত্তরা-আজমপুর ওভার ব্রিজের কাছে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রায় অর্ধশত গাড়ি নিয়ে লংমার্চে অংশ নিয়েছেন।
তিস্তা নদীতে ন্যায্য পানি দিতে ভারতকে চাপ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তিস্তা নদীতে ন্যায্য পানি দিতে বাধ্য করতে আপনারা ভারতকে চাপ দিন।’
এ ছাড়া ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য পানি পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের যৌক্তিক দাবিটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করাও এই লংমার্চের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান মির্জা ফখরুল। বাংলাদেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে, ন্যায্য দাবি অনুযায়ী তিস্তা নদীতে পানি দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। উত্তরা, টঙ্গী, জয়দেবপুর, কোনাবাড়ী হয়ে কালিয়াকৈর এলাকায় আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম পথসভা করেন লংমার্চে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
সেখানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের ৫৪টি নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এগুলো আন্তর্জাতিক নদী। তাই নদীর ন্যায্য হিস্যা পাওয়া আমাদের অধিকার। এই সরকার আমাদের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।’ যারা অধিকার আদায়ে ব্যর্থ, তাদের উত্খাত করতে হবে। ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। সে আন্দোলনে অংশ নিতে এখনই সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। কালিয়াকৈরে পথসভা শেষে লং মার্চ থেকে টাঙ্গাইলে মূল সড়কের পাশে দ্বিতীয় পথসভা, সিরাজগঞ্জে কড্ডার মোড়ে তৃতীয়, বগুড়ায় চতুর্থ ও গাইবান্ধায় পঞ্চম পথসভা করার কথা।

আজকের কর্মসূচি শেষে রংপুরে অবস্থান করবেন লংমার্চে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পরদিন বুধবার সকাল নয়টায় রংপুরে জনসভা হবে। সেখান থেকে লংমার্চ তিস্তা ব্যারাজ অভিমুখে রওনা দেবে। বেলা ১১টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া এলাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে লংমার্চ শেষ হবে। গত ১২ জানুয়ারি নতুন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর বিএনপি এই প্রথম বড় কোনো কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের কথা বলা হলেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের মধ্যে প্রস্তুতি আছে।
লংমার্চ সফল করতে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। যাত্রাপথের এবং উত্তরাঞ্চলের মোট ১৬টি জেলার নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৯-দলীয় জোটের শরিক দলগুলো লংমার্চে সমর্থন দিয়েছে। ভারতের কাছ থেকে পানির দাবিতে বিএনপি এই কর্মসূচি দিলেও এর মাধ্যমে সরকারবিরোধী ও সরকার পতনের কথাই বলছে দলটি। দলটি মনে করছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকলে তিস্তা চুক্তি হবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল গত রোববার এক গোলটেবিল আলোচনায় বলেছেন, লংমার্চের দুটি দিক আছে। তা হলো, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা এবং সেই সরকারকে দিয়ে ভারতের কাছ থেকে পানির হিস্যা আদায় করা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্য বলেছেন, এই লংমার্চের মধ্য দিয়ে তাঁরা প্রগতিশীল দলগুলোর কাছে যেতে চান। এ জন্য কর্মসূচিতে জামায়াতে ইসলামীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ইতিমধ্যে বাম ধারার দুটি রাজনৈতিক মোর্চা তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ করেছে। ওই দলগুলো তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য ভারতের ব্যাপারে বর্তমান সরকারের নতজানু অবস্থানকে দায়ী করেছে। সভা-সমাবেশে বিএনপিও একই কথা বলে আসছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ