রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......ভ্যাপসা গরমে বন্দর নগরীতে দুর্বিষহ জনজীবন

ভ্যাপসা গরমে বন্দর নগরীতে দুর্বিষহ জনজীবন

চট্টগ্রাম অফিস (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

দুপুর দুইটার আগেই রিক্সায় ভরপুর নগরীর সিআরবি এলাকা। হঠাৎ দেখলে যে কেউ অবাক হবেন।  জনশূণ্য এলাকাটিতে এত রিক্সা কেন। তবে কাছে গেলেই মিলবে উত্তর। দেখা যাবে কেউ শুয়ে আছে, কেউবা আবার শার্ট খুলে গায়ে একটু মিষ্টি বাতাস লাগানোর চেষ্টায়। বোঝা যাবে, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বৃক্ষের ছায়ায় একটু ক্লান্তি ঘুঁচাতেই রিক্সাওয়ালাদের ভিড়।

শুধু সিআরবি এলাকাই নয়। নগরীর ডিসি হিলসহ বিভিন্ন পার্ক কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানগুলোতে প্রতিদিন দুপুরে দেখা যায় একই চিত্র। রিক্সাওয়ালা, শ্রমজীবী মানুষের পাশাপাশি গরম থেকে রক্ষা পেতে এসব স্থান হয়ে উঠে নগরবাসীর ক্লান্তি ঘুঁচানোর আশ্রয়স্থল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাওয়া তথ্যমতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডে চট্টগ্রামের অবস্থান দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে। কিন্তু, এতেই যেন হাঁপিয়ে উঠেছে নগরবাসী, দুর্বিষহ হয়ে উঠছে  জনজীবন।

নগরীর চৌমুহনী মৌলভীপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা রফিউল কাদের বলেন, ‘একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে বাসায় ঠিক মতো পানি নেই। সব মিলিয়ে একটা অস্বস্থিকর অবস্থায় আছি। বাচ্চারাতো প্রায় অসুস্থই হয়ে পড়েছে বলা চলে।’ পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকার কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘গত রাতে অন্তত চারবার লোড শেডিং হয়েছে। গরমের কারণে ঘুমানোই অসম্ভব হয়ে উঠেছে।’

আবহাওয়া ‍অধিদপ্তরের রেকর্ড করা তাপামাত্রায় বৃহষ্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় এ মাত্রা ৩৪ দশমিক ৭। এমনকি রাজশাহীতে পেরিয়ে গেছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক সন্তোষ চন্দ্র মাতব্বর বাংলনিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে গরমের যে মাত্রা তাকে খুব একটা অস্বাভাবিক বলা যায় না। তবে উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় বাতাসের আদ্রতা বেশী থাকায় গরমটা অস্বস্থিকর হয়ে উঠে।’

নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রচণ্ড গরমে মানুষের পিপাসাকে পুঁজি করে ফুটপাতগুলোতে চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী শরবত বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। একইসঙ্গে জমে উঠেছে তরমুজ, বাঙ্গি, গাজর, শষাসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ব্যবসা। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে এসব খাবার পরিবেশন হচ্ছে। তবুও, প্রচণ্ড গরমে সচেতন মানুষগুলোও রোগের ভয় ছেড়ে ভীড় করছে দোকানগুলোতে। নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার ফুটপাতের তরমুজ ব্যবসায়ী আবদুল হালিম বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় দ্বিগুন বিক্রি হচ্ছে। আগে অন্তত: ৪০টা তরমুজ বিক্রি হতো. এখন সেখানে ৮০-৯০টা বিক্রি হচ্ছে।’

এদিকে, গরমের কারণের শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রাদূর্ভাব। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া,  আমাশয়, শ্বাসকষ্ট ও পেটের পীড়ায় অসুস্থ শিশুর সংখ্যা। ডাক্তাররা গরমের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া ও ক্লান্তি নিবারণের জন্য প্রচুর পরিমাণ স্যালাইনযুক্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ