শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বিএনপি নবম জাতীয় সংসদের অনুপস্থিতির হার ৯৩ শতাংশ, রাষ্ট্রের ক্ষতির ...

বিএনপি নবম জাতীয় সংসদের অনুপস্থিতির হার ৯৩ শতাংশ, রাষ্ট্রের ক্ষতির চার কোটি টাকা

TIB-01প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নবম জাতীয় সংসদের গত দুই বছরের আট অধিবেশনের ১৬৩ কর্মদিবসের মধ্যে ১৫৩ কর্মদিবসই সংসদে যায়নি। তাদের অনুপস্থিতির হার ৯৩ শতাংশ। গত চার বছরের হিসেবে এর হার ৮৩ শতাংশ। এতে রাষ্ট্রের ক্ষতির হয়েছে চার কোটি এক লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

রোববার সকালে রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

এতে বলা হয় গত দুই বছরের সাতটি অধিবেশনে বিরোধী দল ছয়টি অধিবেশনই পুরোপুরি বর্জন করে।

টিআইবি তাদের পরিসংখ্যানে দেখায়, সংসদ সদস্যর প্রাপ্য আর্থিক সুযোগ সুবিধার ভিত্তিতে প্রাক্কলিত একজন সংসদ সদস্যের দৈনিক রাষ্ট্রীয় সম্মানী  ও সুযোগ-সুবিধার আর্থিক মূল্য কমপক্ষে তিন হাজার ৫৫৮ টাকা। এ হিসেবে প্রধান বিরোধী জোটের নবম সংসদের প্রথম থেকে পঞ্চদশ অধিবেশন পর্যন্ত সংসদ বর্জনে রাষ্ট্রের ক্ষতি চার কোটি এক লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় গণপ্রত্যাশার কেন্দ্রস্থল জাতীয় সংসদের কার্যকারিতার পথে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বা জোটের সংসদ বর্জনের ধারা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়েছে।

বছর ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৯ সালে প্রধান বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সংসদে উপস্থিত ছিলেন মোট কার্যদিবসের ২৭ শতাংশ। কিন্তু ২০১২ সালে এই হার গিয়ে দাঁড়ায় ৪ শতাংশে।

নবম সংসদের অষ্টম হতে পঞ্চদশ অধিবেশনে মোট ১৬৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান বিরোধী দল ১৫৩ কার্যদিবস বা প্রায় ৯৩.২৫ শতাংশ কার্যদিবসে সংসদ অধিবেশন বর্জন করে।

সংসদ বর্জনের এ সংস্কৃতি সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চায় বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে অদ্বিতীয়। যা একদিকে যেমন বিব্রতকর, অন্যদিকে তেমনি জনগণের ভোট ও রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাহীনতা বলেও টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি ও বিরোধী দল উভয়কেই নির্বাচনী অঙ্গীকার ও জনগণের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  পর্যবেক্ষণকালে (দুই বছরে) অনুষ্ঠিত ১৬৩টি কার্যদিবসে সংসদ কার্যক্রম চলেছে ৫০২ ঘণ্টা ১৯ মিনিট। যা প্রতিদিন প্রায় তিন ঘণ্টা এবং বছরে ৮১ দিন। যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সে এ সময় ছিল প্রতিদিন আট ঘণ্টা এবং বছরে ১৪৭ দিন। ভারতের লোকসভায়ও অধিবেশন চলে দিনে ছয় ঘণ্টা।

এ দুই বছরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান (নীলফামারী-৪) সর্বোচ্চ ৯৯ শতাংশ অধিবেশনে এবং প্রথম দুই বছর শতভাগ অধিবেশনে যোগ দেন। অন্যদিকে কেউ কেউ মাত্র ১১ শতাংশ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬৩ দিনের মধ্যে ১৪০ দিন অধিবেশনে যোগ দেন। যার হার ৮৬ শতাংশ। আগের দুই বছরে এর হার ছিল ৭২ শতাংশ।

সার্বিকভাবে গড় উপস্থিতি ছিল ২১৪ জন সংসদ সদস্যের। যা প্রথম দুই বছরের তুলনায় (৬৭ শতাংশ) কমে দাঁড়িয়েছে ৬১ শতাংশে। সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল চতুর্দশ অধিবেশনে। গড়ে ২২৫ জন ও সবচেয়ে কম পঞ্চদশ অধিবেশনে গড়ে ২০১ জন।

প্রধান বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি ১৬ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন প্রায় দুই শতাংশ। একমাত্র স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের অধিবেশনে যোগদান ছিল ৬৫ শতাংশ। যা আগের দুই বছরের (৬৮ শতাংশ) চেয়ে কম।

জোটের বাইরে বিরোধী দল এলডিপির ড. অলি আহমেদ বীর বিক্রম মাত্র ২০ শতাংশ কর্মদিবসে সংসদে যোগ দিয়েছেন।

গত চার বছরে প্রধান বিরোধী দল ২০০৯ সালের ৮৬ কর্মদিবসের মধ্যে ২৩ কর্মদিবস, ২০১০ সালে ৮৮ কর্মদিবসের মধ্যে ২১ কর্মদিবস, ২০১১ সালে ৮০ কর্মদিবসের মধ্যে ৭ কর্মদিবস ও ২০১২ সালে ৮৩ কর্মদিবসের মধ্যে তিন কর্মদিবস সংসদে যোগ দেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ