সোমবার, মে ৬, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করতে বিএনপি বাধার সৃষ্টি : প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করতে বিএনপি বাধার সৃষ্টি : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করতে বিএনপি বাধার সৃষ্টি করে। যুদ্ধাপরাধী বাঁচাতে-রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়াতে সহায়তা করে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধ বিচার বাঞ্চাল করতে দুর্নীতিবাজ বিএনপি-জামায়াত হেফাজতকে সাথে নিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। মসজিদ-কোরআন শরীফে আগুন দিয়েছে। আমাদের নির্বাচনী ওয়াদা বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্বাপরাধীর বিচার বাংলার মাটিতেই হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জামালপুরের ইসলামপুর পৌর মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।

দেশের মানুষকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি বাড়ে। দুর্নীতির মাধ্যমে বেগম জিয়ার ছেলের বিদেশে পাচার করা টাকা এখন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই টাকা কার টাকা। এই টাকা জনগণের টাকা।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির শাসন মানেই হত্যা-খুন, ধর্ষণ অপহরণ, দুর্নীতি অন্যায়-অবিচার আর অপরাধের স্বর্গরাজ্য। বিএনপির ক্ষমতা মানেই বিদ্যুৎ ল-সারের জন্য কৃষককে প্রাণ দেয়া। আর আ’লীগের শসন মানে দেশের উন্নতি, স্বস্তি, শান্তি এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। ইতোমধ্যেই দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ক্ষুধা-দারিদ্রের হার কমেছে। বেকারত্ব হ্রাস পেয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে। সার-তেলের হাহাকার বন্ধ হয়েছে।

জামালপুরের নৌকা পাগল মানুষের মাঝে হাজির হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বস্ত্র বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার। বিএনপি ক্ষমতায় এসে শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান ক্ষেত্র বন্ধ করে দেয়। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ভোট চুরি করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়। দেশের সকল ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। আমরা জনকল্যাণে নিবেদিত। বিভিন্ন ভাতা, বৃত্তি-উপবৃত্তি বাড়িয়েছি। বিনামূল্যে সঠিক সময়ে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করেছি। বাধ্যতামূলক শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকার মানুষের দোরগোড়ায় পৌছিয়েছি। শিক্ষকদের চাকরী জাতীয় করণসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারী করণ করেছি। ভোট ডাকাতি ভোট চুরি বন্ধ করেছি। গণতন্ত্র রক্ষা করেছি। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। সফলতায় বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মডেল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল প্রবর্তনের মাধ্যমে উচ্চহারে মোবাইল বিল কমিয়ে নিম্ন হারে পৌছে দিয়েছি। যা বিএনপির আমলে ছিল না। ফলে এখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল।

উপজেলা আ’লীগের সভাপতি জিয়াউল হক জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন, খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, ভূমিমন্ত্রী আলহাজ আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় সংসদের হুইপ মির্জা আজম এমপি, ইসলামপুর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ ফরিদুল হক খান দুলাল, সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম খোকা কমান্ডার, ঢাকা মহানগর আ’লীগ সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড.বাকিবিল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজনু, জেলা প্রশাসক দেলওয়ার হায়দার, পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, ইসলামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্বা আ: বারী মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ দিদার, মেলান্দহ উপজেলা চেয়ারম্যান ফারহান জাহেদী সফেন, মাদারগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল, বকশীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আ: রউফ তালুকদার প্রমুখ।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অর্ধশত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে আড়াই হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ইসলামপুর উপজেলায়। দারিদ্র্য পীড়িত জেলাবাসীসহ ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ এবং মেলান্দহ উপজেলার বৃহৎ অংশ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগদান করেন। উপজেলা আ’লীগ ও  প্রশাসনসহ সর্ব স্তরের জনতা ইসলামপুরকে বর্ণিল সাজে রাঙ্গিয়ে তুলেন।

বিকেল ৩ টায় জনসভা শুরুর কথা থাকলেও দুপুরেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়। প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে এসে বিকেল ৫টায় মঞ্চে প্রায় ২০ মিনিট বক্তব্য রাখেন।

জামালপুর সদর উপজেলায় ১২শ কোটি টাকায় ৯৮.৮৪৩ মেঘাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল পাওয়ার প্লান্ট, মেলান্দহ উপজেলার ডেফলাপাড়া ঘাটে ১শ’ ৩কোটি, মেলান্দহ রায়গঞ্জ রাস্তার গার্ডার ব্রীজ, শ্রমগঞ্জ-বেলতৈল জিসি রাস্তার আরসিসি ব্রিজ, টনকি-পচাবহেলা বাজার সিজি রাস্তা, বল্লকপুর ব্রিজ, ইসলামপুরের ৯৯কোটি, ২৫কোটি টাকার হেল্থ ইন্সটিটিউট টেকনোলজিস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণসহ ২১টি, মাদারগঞ্জের জোনাইল-কয়ড়া-হাটমাগুরা, তারতাপাড়ার ৪টি ৫০০ মি: ব্রিজ, কয়ড়া-সাতপোয়া ব্রিজ, সরিষাবাড়ি ব্রাহ্মনজানি গার্ডার ব্রিস, ঝালপাড়া আরসিসি ব্রিজ, তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, সদর উপজেলার বাঁশচড়া-চেচুয়া মুক্তাগাছা সড়ক নির্মাণ, নান্দিনা-ধনবাড়ি সড়ক নির্মাণ, নলকুড়ি, মধ্যগজারিয়া, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেএইট শামসুল হক হাই স্কুল, যথার্থপুর দাখিল মাদ্রাসা, রশিদপুর এন ফাজিল মাদ্রাসার নতুন ভবন, প্লান টু প্লান ডিজিটাল সার্ভসহ ২৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

এতে ব্যায় হয় ৬০ কোটি ৭৪ লাখ ৮৬ হাজার ৮শ’ ১০ টাকা। বকশীগঞ্জ-বালুগাঁও থেকে দেওয়ানগঞ্জ রাস্তার ৪টি ব্রিজ, কামালপুর-হাতীবান্ধা, সন্ধাকুড়া সীমান্ত সড়ক, বকশীগঞ্জ-শ্রীবর্দী ভায়া শেরপুর রাস্তা প্রসস্ত করণ, বকশীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন, বকশীগ্ঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণ, বকশীগঞ্জ মুক্তিযোদ্বা কমপ্লেক্সর ভবন, খাতেমুন মইন মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভবন, সানন্দবাড়ি কলেজের ভবন, দেওয়ানগঞ্জ একে মেমোরিয়াল কলেজের ভবন নির্মাণ, সরিষাবাড়ি মুক্তিযোদ্বা কমপ্লেক্স, জামালপুরের সাথে মেলান্দহের যোগাযোগ সড়কের দেওরপাড় চন্দ্রা ঝিনাই নদীর উপর ব্রিজ, মাদারগঞ্জ আদারভিটা ঝিনাই নদীর উপর গার্ডার ব্রিজ, ঝাড়কাটা-চরপাকেরদহ সড়কে ২টি ব্রিজ, খিলকাটি রাস্তার গার্ডার, তেঘরিয়া-ঝারকাটা বাজার রাস্তার ব্রিজ, ফুলজোড়-আটাত্তর রাস্তার গার্ডার ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধন করবেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ