বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়তামাকের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের উপর মত বিশ্লেষকদের

তামাকের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের উপর মত বিশ্লেষকদের

TOBACCOসিগারেট-বিড়ি-জর্দা-গুলসহ তামাকজাত পণ্য ব্যবহারে দেশে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ৫৭ হাজার মানুষ। এছাড়া দেশে জর্দা এবং গুলের ১৪১টি কারখানায় ৫ হাজার শিশুসহ মোট ৩৭ হাজার শ্রমিক পরোক্ষভাবে তামাকের ভয়াবহ ক্ষতির শিকার। তাই এর ব্যবহার কমাতে তামাকজাত সব পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের কথা বললেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানান তারা। সেলিয়া সুলতানার বিশেষ প্রতিবেদন। আব্দুর রহিম ১৫ বছর বয়সে ধুমপান শুরু করেন। প্রায় ৬০ বছরের কাছাকাছি এসে এখন তিনি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন। যাবতীয় সহায় সম্পদ সব নিঃশেষ করে এখন শুধু-আরো কয়েকটি দিন বাঁচার চেষ্টা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, তামাকের ব্যবহার বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫৭ হাজার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ ভুগছে নানা রোগ ব্যধিতে। আর চিকিৎসা খরচ হয় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। আর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনেক নারী ধুমপান এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এমনকি ভুমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করছে অনেক শিশু।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক বলেন, ৯০ শতাংশ ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী হচ্ছে ধূমপান। সেটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ভাবেই হতে পারে। হৃদরোগের ২৫ শতাংশের জন্য দায়ী ধূমপান। এছাড়া গর্ভস্থ শিশির মৃত্যুরও কারন হতে পারে এই ধূমপান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক জাত পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপ করা হলে তামাকের ব্যবহার কমবে। সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে অন্তত ১৫শ’ কোটি টাকা।

গবেষক তাইফুর রহমান বলেন, তামাকের খুচরা মূল্যের উপর কর বাড়ালে মানুষের এটি কিনতে কষ্ট হবে। তিনি আরো বলেন, শুল্কের পরিমান না বাড়িয়ে বাড়ানো হচ্ছে যাতে করে সরকার লাভবান না হয়ে লাভবান হচ্ছে তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানি। ধুমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন করা হলেও তা বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দের অপ্রতুলতা কথা বললেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডা. এ কে এম জাফরউল্লাহ বলেন, বিদ্যমান বাজেট তামাক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। তবে তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে শুল্ক গ্রহণ করা হয়, তার একটি বড় অংশ এই কাজে ব্যবহৃত হলে তামাকের এই মরণ ছোবল থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব।

তামাক বিরোধী সংস্থা ‘তাবিনাজ’ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজলভ্যতার কারণে বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্ক ৪৩ শতাংশ মানুষের মধ্যে ২২ শতাংশ ধুমপান এবং ২৭ শতাংশ অন্যান্য তামাক সেবন করেন। যার মধ্যে ২৮ শতাংশই নারী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ