ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এখনো বর্ষা আসেনি। আর কিছুদিন পরেই আসছে বর্ষা। প্রকৃতিতে বর্ষা মানে স্বস্তির নিঃশ্বাস। বর্ষার পানি পেয়ে সজীব হয়ে ওঠে প্রকৃতি। গতকাল থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া এএফসি মেয়েদের এশিয়া কাপের বাছাইপর্বের ‘বি’ গ্রুপের খেলায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গোলবন্যা বইয়ে দিয়েছে ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ড। অনেক দিন পর ফুটবল প্রেমিকরা গোলবন্যা উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন। ইরানকে ৬-০ গোলে ফিলিপাইন এবং দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৯-০ গোলে হারিয়েছে থাইল্যান্ড।
বাংলাদেশের মেয়েরা যে থাইল্যান্ডের মেয়েদের কাছে হালি হালি গোল হজম করবে এমনটা কেউ ভাবেননি। তবে এ ম্যাচে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা যে জিতবে না তা আগেই স্পষ্ট হয়েছিল র্যাংকিংয়ে থাইল্যান্ডের অবস্থান ২৯ এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। সে হিসেবে ১০৮তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের মেয়েরা যে জিততে পারবেন না তাই স্বাভাবিক। প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে ছিলেন বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে আরো ৫ গোল করায় ৯-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে জিতে মাঠ ছাড়েন থাই মেয়েরা। বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়া জোনে এখনো যে পিছিয়ে রয়েছে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। ঘরোয়া ফুটবলে সাবিনা এবং সুইনো প্রু মারমা প্রতিপক্ষের জালে হালি হালি গোল করলেও গতকাল থাইল্যান্ডের বিপদসীমানায় যুগপৎ আঘাত হানতে পারেনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের নিশা রোমেন হ্যাটট্রিকসহ ৪ গোল করেছেন।
দিনের প্রথম ম্যাচে ফিলিপাইন ৬-০ গোলে হারিয়েছে ইরানকে। র্যাংকিং এগিয়ে থাকা মানে যে শক্তিশালী নয় তা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন ফিলিপাইনের মেয়েরা। র্যাংকিংয়ে ইরানের অবস্থান ৫২ আর ফিলিপাইনের অবস্থান ৮৩। শারীরিক গড়নে ইরানের মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন ফিলিপাইনের মেয়েরা। ঢাকায় আসার আগে ফিলিপাইনের মেয়েরা যুক্তরাষ্ট্রে দুদফা অনুশীলন করেছেন। ইরানের জালে প্রথমার্ধে ৫ বার বল পাঠান আরনেস্ট নিয়েররাসের শিষ্যরা। ফিলিপাইন দলের ১৬ জন খেলোয়াড় যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে খেলে থাকে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে টুর্নামেন্টও খেলেছে ফিলিপাইন ফুটবল দল। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে গত বছরের নভেম্বরে বাইকিং কাপ ফুটবল খেলেছে কোচ আরনেস্ট নিয়েররাসের দল।
ফিলিপাইনের মেয়েরা শুরু থেকেই ইরানের মেয়েদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন। ২ মিনিটের মাথায়ই গোল পেয়ে যায় ফিলিপাইন। ওলাউডিনের কর্নার থেকে মিডফিল্ডার হেদার কুক নিশানাভেদ করলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় নীল জার্সিধারীরা। ইরানের মেয়েরা এক গোলের রেশ কাটাতে না কাটাতেই পরের মিনিটে মেরি জুরাডো ব্যবধান দ্বিগুণ (২-০) করেন। দুই গোলের পর আরো উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন ফিলিপাইনের মেয়েরা। ইরানের মেয়েরা একটু গুছিয়ে ওঠার আগেই জেসি অ্যানি শাগ তৃতীয় গোল করেন। ৩৪ মিনিটে ইরানের ডিফেন্ডার শারসিন কামাঙ্গার নিজেদের জালে বল পাঠালে ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় নীল জার্সিধারীরা। ৪১ মিনিটে ইরানের গোলরক্ষক মরিয়ামকে বোকা বানিয়ে জোয়ানা হাউফলিন বল জালে জড়ালে ব্যবধান দাঁড়ায় ৫-০। প্রথমার্ধে ৫ গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্থে একটু রিলাক্স মুডে খেলতে থাকে ফিলিপাইন। খেলার শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে শাগ গোল করলে ৬-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফিলিপাইন।