ইয়াবাসহ আটক হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফার ছেলে রফিকুল ইসলাম রুবেল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক সম্রাট। আর ডিএনসিসির ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ডিএনসিসির বর্তমান প্যানেল মেয়রকে পুলিশের তালিকায় মাদকের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি বছরে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের ৪৫ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে প্যানেল মেয়রের ছেলে ১২ নম্বরে রয়েছেন। আর আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের তালিকায়ও প্রথম দিকে রয়েছেন প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তাফার নাম।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে ডিএনসিসির প্যানেল মেয়রের ছেলে রুবেলসহ তানজিয়া আক্তার শিউলী ওরফে সীমা ও মো. আওলাদ হোসেন নামে আরও দুই মাদক বিক্রেতাকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের ওইদিনই পুলিশ ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চায়। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। বর্তমান তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। পল্লবী থানায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলা নম্বর ৮৫।
এদিকে শনিবার গুলশান-২ ডিএনসিসির নগরভবনে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্যানেল মেয়র মো. মোস্তফা জামাল। তিনি দাবি করেছেন, তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও কুচক্রীমহল একজোট হয়ে তাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে তার ছেলেকে প্রতারণামূলকভাবে গ্রেফতার করিয়েছেন। তার ছেলে একজন ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসা করার কোনো প্রয়োজন নেই তার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের তালিকায় কত কিছু থাকে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেকে এসব করিয়ে থাকে। এসব তালিকা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। সূত্র জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর বি-ব্লক এলাকা থেকে পুলিশের সাবেক এসআই সাইদুর রহমানের বাসা থেকে ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফার ছেলেসহ তিনজনকে আটক করা হয়।
অভিযোগ মিলেছে, মাদক সম্রাট রুবেল বাবা পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলরের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মিরপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। তবে প্যানেল মেয়রের ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফার ছেলে মাদক ব্যবসা করে বলে তারা কখনো শুনেননি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কেউ এসব করে থাকতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা করা হয়নি। গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তাদের আটক করা হয়েছে। আর আগে থেকে আমাদের জানা ছিল না, ওরা কারা।
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, প্যানেল মেয়র সংবাদ সম্মেলন করে কী বলল, না বলল সেসব ভাবার সময় নেই। কেননা, মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে আমাদের প্রতি। আর তিনিও তো ওইদিন আমাকে অনেক অনুরোধ করে বলেছেন, ভাই আমার ছেলেটা নষ্ট হয়ে গেছে। ছেলেকে ছেড়ে দিন, নইলে আমি সমাজে খুবই বিব্রত হব।