রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল ঢাকা, নৌমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম

শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল ঢাকা, নৌমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম

Sciience-Labবাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ। সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে নাকাল সাধারণ মানুষ। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা  ৯ দফা দাবি আদায়ে সাতদিনের আলটিমেটাম দিয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নৌমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩০ জুলাই দুপুর পৌনে ১ টায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী শাহীন সিফাত সংবাদ সম্মেলন করে এ আলটিমেটাম দেন।

৯ দফা দাবি হচ্ছে, বোপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং সংবিধানে সংযোজন করতে হবে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, এমইএস ফুট ওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে, শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে,  ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া যাবে না, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে সড়ক ঢাকার সায়েন্সল্যাব ও বাটা সিগন্যালের আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। অন্যদিকে সকাল থেকে বিএফ শাহীন কলেজ, কুর্মিটোলা শাহীন কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীসহ আশপাশের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। একই সঙ্গে তারা নৌমন্ত্রীর রোববার দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানান। শিক্ষার্থীদের দাবী, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রীকে এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

সড়ক অবরোধে রাজধানীর বিমানবন্দর, মিরপুর, মহাখালী, নিউ মার্কেট, পল্টন, শাহবাগ, রামপুরা,ফার্মগেট ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। যানজট প্রধান সড়ক ছাড়িয়ে এলাকার অলিগলি পর্যন্ত ছেয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য বাসা থেকে বের হওয়া যাত্রীরা পড়েছেন তীব্র যানজটে। যাত্রীরা বলছেন, টানা দু-তিন ঘন্টা ধরে বাসে বসে থাকলেও মিলছে না গন্তব্যের দেখা। এমনকি দেড় দুঘণ্টা ধরে বাসও নড়াচড়া করছে না বলে হতাশা জানান যাত্রীরা।

যাত্রাবাড়ী থেকে মোহাম্মদপুরগামী পরিবহন ট্রান্সসিলভার যাত্রী অরুন বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে সাড়ে দশটায় বাসে উঠেছি। সোয়া ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে এসে গাড়ি এসে থেমেছে,এখন সাড়ে বারোটা বাজলেও বাসের নড়াচড়া দেখছেন না তিনি। তিনি উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, আন্দোলন তো যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু দুপুর ১টায় কৃষি মার্কেট এলাকায় একটা ইন্টারভিউ ছিল। এখন মনে হয় তা আর দিতে পারবো না। কারণ, শুনেছি সাইন্সল্যাবে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছে।

গুলিস্তানে রানা নামে একজন যাত্রী বলেন, ‘আমি সকাল দশটায় বাসা থেকে বের হয়েছি সদরঘাট হয়ে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য। কিন্তু বিহঙ্গ গাড়ি করে শেওড়া পাড়া পর্যন্ত এসে দেখি গাড়ি আর যাচ্ছে না। দেখলাম গাড়ির দীর্ঘ যানজট। এক দিকে রাস্তা কাঁটা ছেঁড়া, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। এ কারণে পাঠাওতে গুলিস্তান পর্যন্ত এসেছি’। পল্টন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ রিয়াজ রায়হান বলেন, সকাল থেকেই যানজট। আমাদের কিছুই করার নেই। আন্দোলনের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত যানজটে তিনি নিজেও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ অবরোধ তুলে নিতে কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানো হচ্ছে। রোববার দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে হোটেল রেডিসন এলাকায় জাবালে নূর বাসের চাপায় রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। বাসচাপায় আহত অন্তত ১০ জন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ