বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই : প্রধানমন্ত্রী

জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই : প্রধানমন্ত্রী

গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ উন্নত হয় বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সামনে ডিসেম্বরে নির্বাচন। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই; এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ নাই। তিনি বলেন, ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে যে দেশ উন্নত হয় সেটার প্রমাণ এখন নিশ্চয়ই আপনারা পাচ্ছেন। এখন সমুদ্রের তলদেশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে। সেই অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়। সোমবার ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৩৯ জন সরকারি কর্মচারী ও ৩ প্রতিষ্ঠানকে ‘জনপ্রশাসন পদক-২০১৮’ পদক ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পর একটা রক্তাক্ত অবস্থা বারবার বিরাজ করেছে। যা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বারবার বাধাগ্রস্ত করেছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে অনেক সমস্যার সম্মূখীন হতে হয়েছে। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছর যেতে না যেতেই সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশকে যখন তিনি গড়ে তুলেছেন। উন্নয়নের পথে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে তিনি যাত্রা শুরু করেছেন ঠিক সেই সময়ে এল চরম আঘাত। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল। এ হত্যাকাণ্ডটা বাংলাদেশের জন্য কতবড় আঘাত তা জাতি উপলদ্ধি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই ৭৫-এর পনেরো আগস্টের পর সংবিধান লংঘন করে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা এবং ক্ষমতাকে ঘিরে নিজেদের ভাগ্য গড়ার দিকে ক্ষমতাসীনদের নজর ছিল তা দেশের দিকে ছিল না। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে দেশ গড়ে ওঠার কথা ছিল সেই দেশ দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। সেদেশের মানুষ বঞ্চিত থেকে গেছে, ক্ষুধার্ত থেকে গেছে। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে, ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে এবং সেখানে একের পর এক ক্যু হয়েছে। আর এর খেসারত দিয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও সিভিল প্রশাসন, জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও এর শিকার হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পরের ইতিহাস হচ্ছে হত্যার ইতিহাস, সংবিধান লংঘনের ইতিহাস, ক্যু’র ইতিহাস, ক্ষমতা দখলের ইতিহাস। পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছেন। দেশের স্বার্থ তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি। দেশকে ভিক্ষার ঝুলি ধরিয়ে দেওয়ার মতো অবস্থা। পচাত্তরের পরবর্তী শাসকরা চেয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিদেশে ঘুরে বেড়াক।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা সময় প্রচলিত ছিল লাল ফিতার দৌরাত্ম্য, এখন অবশ্য লাল ফিতা ব্যবহার হয় না, সাদা ফিতা ব্যবহার হয়। কিন্তু ওই ফিতার দৌরাত্ম্যটা যেন না থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজে জটিলতা থাকবে। একটা সময় প্রচলিত ছিল লাল ফিতার দৌরাত্ম্য, এখন অবশ্য লাল ফিতা ব্যবহার হয় না, সাদা ফিতা ব্যবহার হয়। সাদা ফিতা ব্যবহার হলেই কাজের গতি দ্রুত হবে তা যদিও নয়, কিন্তু ওই ফিতার দৌরাত্ম্যটা যেন না থাকে। কোনো কাজ যেন থেমে না থাকে, কোনো কাজ যেন পড়ে না থাকে। আপনাকে একটা ফাইল দেওয়া হলো, এটা পড়ে থাকলো। হয় তো হারিয়েও গেল, ভুলেও গেল, এটা যেন না হয়। আবার এমন প্রকল্প না নিয়ে আসা, যেটার কার্যকারিতা খুব একটা নেই বা যাতে খুব একটা শুভফল পাওয়া যাবে না। যেভাবে কাজ করলে সঠিকভাবে জনসেবাটা নিশ্চিত হবে, সেভাবে কাজ করতে হবে।

সরকারপ্রধান কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি দেশ গড়ার কাজে লাগাতে হবে। একটা সময় ছিল সরকারি চাকরি করলেও বেতন না করলেও বেতন। কাজ করলে করলাম, না করলে না করলাম, এ চিন্তাটা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। একটা কথা মনে রাখতে হবে, সরকারি চাকরি মানে আমার দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় সবার বেতন, আরাম-আয়েশ সব কিছু। সুতরাং জনগণের সেবা করা, তাদের জন্য ভালো কিছু করার চিন্তাটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে। তৃণমূলের মানুষের দিকে দৃষ্টি দিয়ে চিন্তা করার অনুরোধ করছি। তাহলে আমাদের উন্নয়ন সার্থক হবে, এ দেশ উন্নত হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ