রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদটপপ্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা ৮৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে: রিজভী

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা ৮৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে: রিজভী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনরা দেশ থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। জাতীয় সংসদে খালেদা জিয়াসহ জিয়া পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তদন্তের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব এ অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ নাগরিক সংসদের উদ্যোগে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, চক্রান্ত এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক ওই আলোচনা সভা হয়।
তিনি বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) আজকে জোর করে ক্ষমতায় আছেন, এই জোর করে ক্ষমতায় থাকার কারণেই তো বিভিন্ন প্রজেক্ট, মেগা প্রজেক্টের নামে ১ টাকার কাজকে আপনি ১০০ টাকা করেছেন। সেইসব প্রকল্পের টাকা কোথায়? সেটা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন তারা হিসাব-নিকাশ করে বলেছে, ৮৬ হাজার কোটি টাকা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা এখান(বাংলাদেশ) থেকে পাচার করেছে।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে দুঃশাসনের কারণে কেউ কথা বলতে পারছেন না। যারা এসবের গবেষণা করেন তারা ভয়ে সেটা তুলতে পারছেন না। কিন্তু বাইরের গণমাধ্যম বা বাইরের গবেষকরা তো চুপ করে বসে নেই, তারা সেটা অবলোকন করছেন, তারা দেখছেন। ক্ষমতাসীন দলের অন্যদের বাদ দিলাম, শুধু আপনার ঘনিষ্ঠজনরাও যত টাকা নিয়ে গেছে সেই টাকার হিসাব একদিন জনগণের কাছে দিতে হবে।
সরকারের অশুভ পরিকল্পনার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, যেভাবে আবার হঠাৎ করে যেভাবে গুম বেড়েছে, ক্রসফায়ার বেড়েছে, হঠাৎ করে যেভাবে গ্রেফতার বেড়েছে। এখানে মনে হয়, সরকারের কোনো একটা অশুভ পরিকল্পনা আছে, কোনো খারাপ একটি কাজের দিকে তারা এগোচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র  যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা বলতে চাই, যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন তাদের সতর্ক খাকতে হবে, ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কাউকে ভয় পেলে চলবে না, সব ভয়কে জয় করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিতে হবে। বরিশালের সাবেক সংসদ সদস্য জহিরউদ্দির স্বপনের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাংচুরের ঘটনাসহ নওগাঁ, মুন্সিগঞ্জ, ফেনী, পটুয়াখালী, রংপুর, রাজশাহী, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীকে গুম-হত্যাকাণ্ড ও গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানান রিজভী।
রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ দিতে বিএনপি রিলিফ টিমকে উখিয়ায় যেতে না দেয়ার ঘটনাকে সরকারের আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি বলেন, ‘দেখুন কত নির্দয়, কত নির্মম এই সরকার। ত্রাণ দিতে দিচ্ছে না আর ওখানে রোহিঙ্গা শিশুরা না খেয়ে আছে। অর্থাৎ মিয়ানমারের সূচির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডের কোনো গরমিল নাই, একই কর্মকাণ্ড।
রিজভী আরও বলেন, রোহিঙ্গারা প্রতিদিন মরছে ক্ষুধায়, চিকিৎসার অভাবে, আশ্রয়ের অভাবে, কোনো ছায়া নেই। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি যাতে আন্তর্জাতিকভাবে কেউ জানতে না পারে, দেশের মানুষ যাতে জানতে না পারে, সেটাকে আড়াল করার জন্য হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী বলে বসলেন যে, ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। জনদৃষ্টিকে ভিন্নদিকে সরানোর জন্য মাঝে-মধ্যে ছু -মন্থর দেন শেখ হাসিনা। যাতে এটা নিয়ে মানুষ ব্যস্ত থাকে।
আরে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক তো আপনিই। পদ্মা সেতুতে সুনির্দিষ্টভাবে একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি বিদেশি আর্থিক সংস্থা অভিযোগ তুলল এবং সেই সংস্থা এখন পর্যন্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করেননি। আর আপনি(প্রধানমন্ত্রী) তাকে বললেন দেশপ্রেমিক। আপনি দুর্নীতির চাষ-বাস থেকে শুরু করে, দুর্নীতির উৎপাদন থেকে শুরু করে দুর্নীতির এত বড় পৃষ্ঠপোষক পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
বাংলাদেশ নাগরিক ফোরামের সভানেত্রী খালেদা ইয়াসমীনের সভাপতিত্বে ও এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় আলোচনাসভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ