বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়চার সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ : প্রচারণা শুরু

চার সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ : প্রচারণা শুরু

image_1284রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে গতকাল সোমবার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলার রির্টানিং অফিসার প্রার্থীদের উপস্থিতিতে এই প্রতীক বরাদ্দ করেন। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা পুরোদমে গণসংযোগে শুরু করেছেন। আগামী ১৫ জুন চার সিটিতে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহীতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন পেয়েছেন তালা প্রতীক। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আনারস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান চশমা প্রতীক পেয়েছেন। খুলনায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক তালা প্রতীক ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত শফিকুল ইসলাম মধু দোয়াত-কলম প্রতীক পেয়েছেন। আর মহানগর বিএনপির পদত্যাগী সাধারণ সম্পাদক পদ মনিরুজ্জামান মনি পেয়েছেন আনারস প্রতীক। সিলেটে মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আনারস, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী টেলিভিশন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছালাউদ্দিন রিমন তালা প্রতীক পেয়েছেন। বরিশালের তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১৪ দল সমর্থিত শওকত হোসেন হিরন টেলিভিশন প্রতীক পেয়েছেন। ১৮ দল সমর্থিত আহসান হাবীব কামাল আনারস ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহামুদুল হক খান মামুন দোয়াত-কলম প্রতীক পেয়েছেন। রাজশাহী থেকে সাইদুর রহমান ও এসএম আতিক জানিয়েছেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় অফিস থেকে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই ঘোষণা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন পেয়েছেন তালা প্রতীক। গতবারও তিনি তালা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পেয়েছেন আনারস প্রতীক। গতবার তিনি বাঘ প্রতীক নিয়ে নিবার্চন করলেও এবার প্রতীক তালিকায় বাঘ ছিলো না। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান পেয়েছেন চশমা প্রতিক। এবার মেয়র পদে এই তিন জন ছাড়াও ৩০টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের ১৫৪ জন ও ১০ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদের ৬৬ জন প্রার্থীর মধ্যের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। এদিকে, প্রতিক বরাদ্দের পর পরই মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। এই দুই মেয়র পদপ্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন তাদের সমর্থকরা। মাইকিংয়ে দুপুর থেকে সরগরম হয়ে উঠেছে নগরীর অলিগলি। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) এর মাযার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে তাঁর জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছেন। এসময় লিটনের সঙ্গে ছিলেন সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামীলীগ নেতা মীর ইকবাল, শফিকুর রহমান বাদশা, মোহম্মদ আলী কামাল, জাসদ নেতা প্রদীপ মৃধা, আব্দুলাহ আল মাসুদ শিবলী প্রমুখ। এরপর তিনি জাতীয় চার নেতার অন্যতম ও তাঁর পিতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান এর মাযার জিয়ারত করেন। পরে তিনি বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করেছেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনি ৩০ নং ওয়ার্ডে যথাক্রমে আরবান মেডিকেল মোড়, নজিরের মোড়, নতুন বুধপাড়া ও চৌদ্দপাই এলাকায় জনসংযোগ/ পথসভা করেন। বিকেল ৫ টা থেকে ১ নং ওয়ার্ডের কাশিয়াডাঙ্গা, কাঠালবাড়িয়া ও রায়পাড়া এবং ৪ নং ওয়ার্ডের বুলনপুর ও পুলিশ লাইন মোড় এলাকা জনসংযোগ/ পথসভা করেন লিটন। অপরদিকে, গতকাল প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার নাগরিক কমিটির প্রার্থী বুলবুলকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছে স্থানীয় ১৮দলীয় জোট। গতকাল দুপুরে নগরীর একটি কমিনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই সর্মনের বিণয়টি জানান ১৮দলীয় জোটের নেতারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর প্রফেসর নজরুল ইসলাম, রাজনৈতিক সেক্রেটারি আবু মোহাম্মদ সেলিম, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মাওলানা আব্দুস সামাদ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা মিনু বলেন, ন্গরিক কমিটির প্রার্থী বুলবুলে পক্ষে জনগণের রায় হবে আওয়ামী সরকারের বাকশাল কায়েমের চেষ্টার প্রতিবাদ। সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণ এবার বুলবুলকে মেয়র নির্বাচিত করবেন বলেও তিনি আশাপ্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনের পর নগরীর সোনাদীঘি মোড়ে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন বুলবুল। এর আগে তিনি হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.) এর মাযার জিয়ারত করেন। বিকেলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নেতকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন বুলবুল।
খুলনা থেকে কাজী তারিক আহমদ জানিয়েছেন, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি আনারস, আওয়ামী লীগ সমর্থিত তালুকদার আবদুল খালেক তালা, ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত শফিকুল ইসলাম মধু দোয়াত-কলম প্রতীক পেয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় খুলনার জিয়া হলে তাদের হাতে এসব প্রতীক তুলে দেন রিটার্নিং অফিসার মোস্তফা ফারুক। এসময় সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সিলেট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন মেয়র পদপ্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় রিটার্নিং অফিসার এমএম এজহারুল হক প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন। মেয়র পদপ্রার্থীদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাগরিক কমিটি ও ১৪ দল সমর্থিত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আনারস, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সম্মিলিত নাগরিক জোট ও ১৮ দল সমর্থিত আরিফুল হক চৌধুরী টেলিভিশন এবং স্বতন্ত্র সালাহ উদ্দিন রিমন তালা প্রতীক পেয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। অপরদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ১৮ দলীয় জোটের মাধ্যমে নির্বাচন কমিটি গঠন করে ভোট যুদ্ধে নামছেন আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল দুপুর ১২টায় হযরত শাহজালাল (র.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আনারস প্রতীক প্রাপ্তির মাধ্যমে আমার প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছ। তিনি বলেন, দরগাহ শরীফে আসার পথে আমি মানুষের স্বতঃস্ফুর্ততা দেখেছি, তাতে মনে হচ্ছে, আমি আবারও মেয়র নির্বাচিত হবো। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি তার সঙ্গে ছিলেন। এদিকে সন্ধ্যায় জিন্দাবাজারের শ্যামলী কমিউনিটি সেন্টারে ১৮ দলীয় জোট নেতারা এক বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে মাঠে প্রচরণায় নামবেন আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমি মেয়র হতে চাই। মানুষের আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করার জন্য ভোট চাইবেন তিনি। আরিফুল হক চৌধুরী তার হলফনামায় ঘরোয়া বৈঠকের সম্ভাব্য খরচ উল্লেখ করেছেন এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা। তিনি ৩০ হাজার পোস্টার, এক লাখ লিফলেট, ২৭ হাজার হ্যান্ডবিল, ৪৫টি ব্যানার মুদ্রণের পাশাপাশি ৪০টি নির্বাচনী প্রতীক তৈরি করে প্রচারণা চালাবেন। এ ছাড়া সিসিক নির্বাচনে প্রতীক পেয়েছেন ৩৩ মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী
বরিশাল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রতীক দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ দেন বিসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. মুজিবুর রহমান। প্রতীক ঘোষণার সময় ১৪ দল সমর্থিত সম্মিলিত নাগরিক কমিটির মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন, ১৮ দল সমর্থিত জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের পক্ষে তার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ১৪ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুনের পক্ষে কেউ এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। রিটার্নিং অফিসার মো. মুজিবুর রহমান জানান, প্রার্থীরা তাদের পছন্দের প্রতীক পেয়েছেন। মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন ‘টেলিভিশন’ প্রতীক চেয়েছেন। তাই তাকে ‘টেলিভিশন’ প্রতীকই দেওয়া হয়েছে। আহসান হাবিব কামাল ‘আনারস’ প্রতীক চাওয়ায় তাকে তার পছন্দের প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তবে মাহমুদুল হক খান মামুন প্রথমে ‘দেয়াল ঘড়ি’ প্রতীক চেয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর মেয়র পদে ‘দেয়াল ঘড়ি’ প্রতীক না থাকায় তাকে তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ‘দোয়াত-কলম’ প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ