সোমবার রাজধানীতে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ সুবিধা দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ।
কাজী আকরাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা কিছু রপ্তানি পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে দেশের কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নয়নে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধার তালিকায় তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশের সব রপ্তানি পণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি।
জিএসপির অধীনে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে আছে- নান ধরনের রসায়ন দ্রব্য, খনিজ দ্রব্য, বিল্ডিং স্টোন, জুয়েলারি, বহুরকমের কার্পেট এবং কিছু কৃষি ও মৎস্যজাত দ্রব্য। জিএসপি শুল্কমুক্ত সুবিধাবহির্ভূত পণ্যগুলোর বেশিরভাগই হলো- বস্ত্র ও পোশাক সামগ্রী, বেশিরভাগ জুতা, হাতব্যাগ ও ব্যাগ সামগ্রী।
তিনি বলেন, ২০১১-১২ অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির মাত্র তিন দশমিক দুই শতাংশ হয়েছে জিএসপির আওতায়। এদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যতো পণ্য রপ্তানি হয় তার ৯৫ শতাংশই তৈরি পোশাক। কিন্তু তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১৫ দশমিক তিন শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক দিতে হয় পাচ শতাংশেরও কম হারে।
দেশে পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি, হালকা প্রকৌশল, মৎস্য ও কৃষি খাত, জাহাজ নির্মাণ ও টেলিযোগাযোগ খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সভায় ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আলেকজান্ডার গাজিস বলেন, বিনিয়োগের জন্য স্বচ্ছতা এবং উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হলে আরো বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। এছাড়া বেসরকারি খাতের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রতি জোর দেন তিনি।
সভায় বাংলাদেশের পোশাক খাতসহ সব শিল্প-কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে তাদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ধরে রাখার ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
মতিঝিলে ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মিলনায়তনে আয়োজিত ওই সভায় প্রতিনিধিদলের ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে আছেন ইউএস-বাংলাদেশ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের সভাপতি সাব্বির চৌধুরী ও সিলিকন ভ্যালির কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর দেওয়ান।এছাড়াও সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী ও হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।