সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিআমরা প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না

আমরা প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না

প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অভয় দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না, ঐক্যের রাজনীতি চাই। দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের অভয় দিচ্ছি, যে আচরণ আমাদের সঙ্গে করেছেন সে আচরণ আপনাদের সঙ্গে করা হবে না। নির্ভয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। এই নির্বাচনে বিজয়ী দল রাষ্ট্র পরিচালনা করুক। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরাও পরিবর্তন চাই। সেই পরিবর্তন অন্য কোনো পন্থায় নয়। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে সেই পরিবর্তন হোক সেটাই আমরা চাই। দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পর্যায়ক্রমে ক্ষমতায় আসবে। অন্য কোনো দলের ওপর জনগণের আস্থা নেই। সে জন্য দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটি’ই আমাদের দাবি বলেন, খালেদা জিয়া।

নির্বাচন কমিশন বাতিল করে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু চাই একটা অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, হঠাৎ কেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট বসানো হলো। টাকার অভাব? এতো চুরি করলে তো অভাব হবেই। চুরি করে ট্রেজারি খালি করে ফেললে টাকার অভাব হবে না? সেটা পূরণ করতে হবে দেশের মানুষের ওপর করারোপ করে। ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীরা চাকরি করে না, কোনো আয়-রোজগারও করে না। তাই আমি দাবি করবো, অবিলম্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হোক।

সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে। এভাবে আর চলতে পারে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলেই এই শূন্যতার অবসান ঘটবে। এ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, অনিবার্চিত সরকার দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। তারা বিরোধী দলকে কোনো কর্মসূচি করতে দেয় না। গণতান্ত্রিক শক্তি দুর্বল হলে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটবে। এর আগে বিকেল ৫টায় কোরআন তেলাওয়াত এবং জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তবে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে বন্যা এবং বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় ঢাকাবাসীর সীমাহীন দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্ব বাতিল করা হয়।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও সহ দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম। দর্শকসারিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, গিয়াস কাদের চৌধুরী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি প্রমুখ। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল, ওলামাদল, কৃষকদল, শ্রমিকদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মৎস্যজীবীদল, তাঁতীদল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসসহ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক শত নেতা-কর্মী এ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ