শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআমি জিরো টলারেন্স নিয়ে সিটি করপোরেশন পরিচালনা করব : আ জ ম...

আমি জিরো টলারেন্স নিয়ে সিটি করপোরেশন পরিচালনা করব : আ জ ম নাছির

কঠোর সমালোচনা হাসিমুখে মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।  সোমবার দুপুরে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনায় মেয়র একথা জানান। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিন। আমি ভুল করলে নি:সংকোচে আমাকে জানান। আমাকে পরামর্শ দিন। আমার সমালোচনা করুন। কঠোর সমালোচনা করুন। আমি হাসিমুখে গ্রহণ করব।’

নাছির বলেন, ‘সমালোচনা মেনে নেব। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আরেকজনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সমালোচনা করবেন না। বিভ্রান্তি থাকলে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমাকে দায়ী করবেন, অভিযুক্ত করবেন। আমি যদি আপনাদের বিবেচনা না করি, তাহলে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমি আ জ ম নাছির উদ্দিন একা নই। আমার সফলতা-ব্যর্থতার সঙ্গে আওয়াম লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম-মর্যাদা জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে অনেকে শংকা প্রকাশ করেছিলেন, অনেক ধারণা ছিল। কিন্তু আমি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর আপনারা দেখেছেন, আমি সবাইকে নিয়ে চলেছি। একইভাবে মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পরও আমি সবাইকে নিয়ে শতভাগ আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চলব। তিনি নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ২৮ এপ্রিল আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। শপথ নিয়েছি। মেয়রের প্রটৌকলও পাচ্ছি। আজ পর্যন্ত আমার মধ্যে কি আচারআচরণে, মনমানসিকতায় কোন পরিবর্তন পেয়েছেন? ‘আমি মনে করি, আমার মধ্যে কোন পরিবর্তন হয়নি। ইনশল্লাহ আমৃত্যু কোন পরিবর্তন হবেনা। আমি যত বেশি বিনয়ী আর মার্জিত হওয়া দরকার ততটাই হতে চাই।’ বলেন মেয়র।

মেয়রের বেতন-ভাতা গ্রহণ না করার ঘোষণা পুর্নব্যক্ত করে নাছির আরও বলেন, ‘আমি বনেদি পরিবারের সন্তান। আপনারা অনেকেই হয়ত জানেননা, উত্তরাধিকার সূত্রে আমি যে সম্পদ পেয়েছি এখানকার কোন আওয়ামী লীগ নেতারই নেই। আমি একজন সফল ব্যবসায়ী। আমার যা আছে নতুন করে আর কিছু আমি পাবার আশা করিনা। ‘আমি যে প্রতিশ্রুতি মানুষকে দিয়েছি জীবন দিয়ে হলেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। কারণ আমার সফল হওয়ার বিকল্প নেই। পাঁচ বছরে ইনশল্লাহ আমি সফল হবই।’ বলেন নাছির।

দলীয় কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘আমি জিরো টলারেন্স নিয়ে সিটি করপোরেশন পরিচালনা করব। আমি ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে এসেছি। আমার আর পাওয়ার কিছু নেই। যারা পেতে চান তারা এখান থেকে সরে যান। আমার কাছে কেউ আপন কেউ পর নন। যারা নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন তারাই আমার আপন। কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের বেতনের বাইরে আর কোন টাকার দিকে দৃষ্টি দেবার সুযোগ নেই। বেতনে যদি আপনি সন্তুষ্ট না থাকেন, তাহলে সিটি করপোরেশন ছেড়ে চলে যেতে পারেন।’

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কমকর্তাদের ডেকে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছিলাম। আমি দায়িত্ব নিতে নিতে বর্ষাকাল চলে আসবে। সুতরাং এ মুহুর্তে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে নালানর্দমাগুলো যাতে পরিস্কার রাখা হয় সেই নির্দেশ আমি দিয়েছি।’ তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছে জানতে চান, ২৮ এপ্রিলের আগের চট্টগ্রাম নগরী আর এখনকার নগরীর মধ্যে কি কোন পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন? এখন কি ডাস্টবিনের ময়লা নিয়মিত পরিস্কার হচ্ছে? নেতাকর্মীরা হচ্ছে বলে জানালে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আরও হবে। পরিকল্পিতভাবে সব করা হবে। আমি কোন অপরিকল্পিত কাজে বিশ্বাসী নই।’

গণসংবর্ধনার শুরুতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। শুরুতেই বক্তব্য দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন মহিউদ্দিন। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাবেন জানিয়ে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

এরপর নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ইছহাক মিয়া, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, নগর মহিলা লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আফতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, ১৪ দলের পক্ষে ন্যাপ নেতা আলী আহমেদ নজির, বিএমএ’র চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি মুজিবুল হক খান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি মো.হারুন এবং কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী। সভায় নির্বাচিত দলীয় কাউন্সিলরদেরও ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ