অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ‘ঢাকার বাইরের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক’ বলে যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন-সে বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্ততঃ এটি তার ‘রাবিশ’ বক্তব্য নয়। আমি তাকে এবং তার অবৈধ সরকারকে আহ্বান জানাই-সময় থাকতে পতনের পদধ্বনি শুনুন, দ্রুত পদত্যাগ করে ‘দেশ বাঁচান, মানুষ বাঁচান’। রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, একদলীয় শাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাকরণই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মেনিফেস্টো। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ক্ষমতারোহণের জন্য নয়, বরং আওয়ামী একনায়কতান্ত্রিকতা ও স্বৈরতান্ত্রিকতা থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্যই জনগণের এই আন্দোলন চলছে। তিনি এফবিসিসিআই সভাপতিকে ‘দলবাজ’ মন্তব্য করে দাবি করেন, তার কারণে ব্যবসায়ী সমাজের বক্তব্য সরকারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না। সরকার প্রধানের রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই চলমান রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। অতএব, স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের পরামর্শ প্রদান করুন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যবস্থাবান্ধব স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং গণহারে পাশ করিয়ে দিয়ে সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে নিলামে উঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষার্থীদের জন্য মায়াকান্না করছেন অভিযোগ করে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ১৯৯৫-৯৬ সালের আওয়ামী নৈরাজ্য ও তাণ্ডবের কারণে এসএসসি পরীক্ষা তিন মাস পেছাতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী সরকার ও পরবর্তীকালের তাদের প্রত্যেক শাসনামলেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল।
তিনি দেশের সকল পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজসহ শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে সম্মিলিতভাবে গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর হুকুমে সারাদেশে দলবাজ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মহোৎসব করছে অভিযোগ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রতিবাদী মিছিলে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে। খুন, গুম, অপহরণ, হামলা মামলার শিকার হচ্ছে রাজপথের অসীম সাহসী আন্দোলনকারী সাথীরা।
শনিবার ঢাকার শ্যামলী থেকে চার শিবির কর্মীকে গ্রেফতারের পর একজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করে অন্য তিন জনের গ্রেফতারের কথা পুলিশ এখনও স্বীকার করছে না বলেও অভিযোগ তোলেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এইকসেঙ্গ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের থানায় ডেকে নিয়ে গুলি করে পঙ্গু করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি এসব হত্যাকাণ্ড ও বন্দুকবাজীর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলে এসব হত্যাকাণ্ডের ও নির্মম বন্দুকবাজীর প্রত্যেকটি ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হবে। চলমান অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউসহ পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রসমূহ, জাতিসংঘসহ সকল বিশ্বসংস্থা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ জানানো সত্ত্বেও সরকারের টনক নড়ছে না বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এ যু্গ্ম মহাসচিব।
