হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ২৬০ ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রতিষ্ঠানটির এমডি তানভীর মাহমুদসহ ২১ জন ব্যক্তি ও ৪২ টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২২টি ব্যাংকে ওই সব হিসাব রয়েছে। ১১ মামলার ৭ তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন ক্রমে বুধবার ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জহুরুল হক ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দের নির্দেশ দেন।
আবেদনকারী ৭ জন তদন্ত কর্মকর্তা হলেন, দুদকের উপ পরিচালক এসএমএম আকতার হামিদ ভুইয়া, উপ সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান ভুইয়া, সহকারী পরিচালক মশিউর রহমান, সহকারী পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত, সহকারী পরিচালক জয়নাল আবেদীন, উপ পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী ও সহকারী পরিচালক মোছাঃ সেলিনা আখতার মনি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, ২৬০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা স্থিতি রয়েছে। ওই সব হিসেবে ১৬শ’ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছিল।
ব্যাংকগুলো হলো, এইচএসবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, আরব বাংলাদেশ ব্যাংক, স্টান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফিন্যান্স।
ব্যাংগুলোর মধ্যে এইচএসবিসি’তে ৭টি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডে ২টি, আরব বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩টি, স্টান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডে ১০টি, ওয়ান ব্যাংকে ১টি, ব্র্যাক ব্যাংকে ৪টি, দি সিটি ব্যাংকে ৫টি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে ১টি, ঢাকা ব্যাংকে ১২২টি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ২৫টি, ডাচ বাংলা ব্যাংকে ১৩টি, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ৪টি, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ৩টি, অগ্রণী ব্যাংকে ১টি, সোনালী ব্যাংকে ২৯টি, প্রাইম ব্যাংকে ২টি, জনতা ব্যাংকে ১৪টি, ইসলামী ব্যাংকে ৮টি, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে ২টি, যমুনা ব্যাংকে ২টি, সাউথ ইস্ট ব্যাংকে ১টি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফিন্যান্সে ১টি একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
যাদের নামে ওই সকল ব্যাংক হিসাব তারা হলেন, হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ, তানভীর মাহমুদের স্ত্রী কোম্পানীর চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মাহবুব আলম, মেসার্স নুরুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ, তুষার আহমেদ, নাজনীন সুলতানা, হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, ওয়ালমার্ক ফ্যাশন লি. ববি ফ্যাশন লি. ববি ডেনিম কম্পোজিট লি. টেক্সটিম কম্পোজিট লি. আসলাম উদ্দিন, লুবনা সুলতানা, সুমন ভুইয়া, আব্দুর মোমিন, রেজাউল করিম, আব্দুস সাত্তার মোল্লা, তারিকুল ইসলাম, হলমার্ক প্যাকেজিং, হলমার্ক নিটিং ইন্ডাষ্ট্রিজ, গোল্ডেন প্রিন্টিং এন্ড এক্সেসরিজ, নিউসান প্যাকেজিং, পারফেক্ট এমব্রয়ডারী, ববি ডেইরী ফার্ম, টি এন ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, ভুইয়া ট্রেডিং, মোল্লা এন্টারপ্রাইজ, এন এম ট্রেডিং, এসএ ট্রেডিং, অরণী এন্টারপ্রাইজ, সেভেন স্টার ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল, সানলাইট ট্রেডিং এন্ড এক্সেসরিজ, শাপলা ইন্টারন্যাশনাল, হাজী এন্টারপ্রাইজ, চাঁন এন্টারপ্রাইজ, তাফসীরুল ইসলাম, মহিদুর রহমান, বিল্লাল উদ্দিন, মামুনুর রশিদ, ফেইথ এন্টারপ্রাইজ, পপুলার এন্টারপ্রাইজ, শাহ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স ফারহান টেক্সটাইল, এইচআর এন্টারপ্রাইজ, তানিয়া এক্সেসরিজ, রায়হান এন্টারপ্রাইজ, শিউলি বেগম, জায়েদুল ইসলাম, হাবিবুননাহার চৌধুরী, ওয়াকিল উদ্দিন আহমেদ, মার্ভেলাস ফ্যাশন, ডেলিটেগ ফ্যাশন, ডন এপারেলস, মাহমুদ এপারেলস, ইসলাম ফ্যাশন, ফারহান ফ্যাশন, জিসান নিট কম্পোজিট, আনোয়ারা স্পিনিং মিলস, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, স্টার স্পিনিং মিলস ও সেঞ্চুরী ইন্টারনাশনাল।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে ফান্ডেড ১৫’শ ৬৮ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে হলমার্ক ও সোনালী ব্যাংকের ২৭ জন কর্মকর্তাকে আসামি করে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ১১টি মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় আসামির মধ্যে ২০ জন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ৭ জন হলমার্কের কর্মকর্তা।
এই ২৭ জনের মধ্যে সাত কর্মকর্তা জেলহাজতে আছেন। এদের মধ্যে তিনজন হলমার্ক গ্রুপের এবং চারজন ব্যাংক কর্মকর্তা। হলমার্ক গ্রুপের তিন কর্মকর্তা হলেন- গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম এবং মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ।
ব্যাংকের চার কর্মকর্তারা হলেন- সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক (সাময়িক বরখাস্ত) একেএম আজিজুর রহমান, জিএম (বর্তমানে ওএসডি) মীর মহিদুর রহমান, ডিজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) শেখ আলতাফ হোসেন এবং ডিজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) সফিজইদ্দিন আহম্মেদ।