প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের এই সফরে ইউএইর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, যুবরাজ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। শেখ হাসিনা রাস আল-খাইমাহও(আরএকে) পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানকার সরকার প্রধান শেখ সৌদ বিন আকর আল-কুয়েসির সঙ্গেও বৈঠক করেন। তিনি আবু ধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক সম্বর্ধনায়ও যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বাংলাদেশ ও ইউএইর মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বন্দিবিনিময় এবং ঢাকাতে বাণিজ্য, জনশক্তি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার করার প্রয়াসে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পেশাদার জনশক্তি রিক্রুটিং এজেন্সি আমলা গ্রুপের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে ১৪টি পেশার বাংলাদেশী নারীদের নিয়োগ করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে শর্ত- সাপেক্ষে বাংলাদেশ নারী শ্রমিক সেখানে পাঠানো যাবে এবং নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।এই কার্য সম্পাদন করতে আগামী বছর থেকে ঢাকাস্থ দূতাবাসে লেবার এটাচে নিয়োগ দিতে সম্মত হয়েছে ইউএই। দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ডের (ডিপি ওয়ার্ল্ড) চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েমের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর পায়রায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার জরিপ চালানোর জন্য দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।
তিনি আহমেদ বিন সুলাইয়েমকে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন, চট্টগ্রামের টেকনাফ থেকে মিরেশ্বরাই পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভয়ে এবং বাংলাদেশে একটি আধুনিক বিমান বন্দর প্রতিষ্ঠারও আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পর বাংলাদেশের সার্বভৌম সমুদ্র সীমায় সামুদ্রিক সম্পদের বিপুল সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে ডিপি ওয়ার্ল্ড চেয়ারম্যান খুব শিঘ্রই বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে সম্মত হন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি, বন্দি বিনিময় এবং ঢাকায় আমীরাতের দূতাবাস স্থাপনের জন্য এক খন্ড জমি প্রদানের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমীরাতের জাতির পিতা শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান প্রতিষ্ঠিত শেখ জায়েদ জামে মসজিদ ও তার মাজার পরিদর্শন এবং সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন।