রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়দ্বীন ইসলাম আমাদের কাছে আল্লাহর আমানত

দ্বীন ইসলাম আমাদের কাছে আল্লাহর আমানত

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমানরা মার খাচ্ছেন ও নির্যাতিত হচ্ছেন জানিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি আব্দুল আজিজ আল শেইখ। শুক্রবার আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নিমরা থেকে হজের খুৎবা প্রদানকালে তিনি এ আহ্বান জানান। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে এ খুৎবা শুরু হয়। শেষ হয় ১২ টা ৪৪ মিনিটে। বিশ্বের ১৬৩টি দেশ থেকে আগত বিশ লক্ষাধিক মুসলমান আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়ে এ খুৎবা শোনেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে দু,চোখের দৃষ্টি হারানো সৌদি গ্র্যান্ড মুফতির এটি ৩৪তম হজের খুৎবা। দৃষ্টিশক্তিহীন এই ইমাম তুলে ধরেন বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি ও কোরান-হাদিসের আলোকে করণীয় দিক নির্দেশনা। খুতবায় মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

গ্র্যান্ড মুফতি তার খুৎবায় বলেন, দ্বীন ইসলাম আমাদের কাছে আল্লাহর আমানত। সুতরাং যথাযথভাবে এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং চর্চা ও পালন আমাদের দায়িত্ব। বিশুদ্ধ ঈমান এবং আমল এ দায়িত্ব আদায়ের প্রথম শর্ত। হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আমাদের সবার রাসূল। তার প্রতি একনিষ্ঠ ভালোবাসা ও গভীর বিশ্বাস ঈমানের পূর্ব শর্ত। মুসলমান হিসেবে প্রতিটি কাজে আমাদেরকে নীতিবান, ন্যায় পরায়ণ এবং সৎচরিত্রের অধিকারী হতে হবে।

মুসলমান হিসেবে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রে শরীয়তই আমাদের প্রধান উৎস। একে কেন্দ্র করেই আমাদের জীবন চালাতে হবে। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ভালো কাজে ব্যয় করতে হবে বলেও জানান গ্র্যান্ড মুফতি। তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা উন্নতি, প্রগতি এবং সভ্যতার মোহে অনৈসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতির প্রতি যেভাবে মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সুতরাং বিপদঘেরা এমন দুঃসময়ে আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে ফিরে আসাই সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। এ প্রত্যাবর্তনের এখনই সময়। আল্লাহর রুজ্জু আঁকড়ে ধরা ছাড়া আমাদের কল্যাণ এবং সমাধানের কোনো অন্য বিকল্প নেই। হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবের গৃহিত যাবতীয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং মুসলিম উম্মাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানান।

এরপর হাজীরা জুমার নামাজ আদায় করেন। সন্ধ্যায় (সূর্যাস্তের পর) তারা মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন। মুজদালিফায় পৌঁছে আবারো এক আজানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। সেখান থেকে জামারায় (প্রতীকী শয়তান)-কে নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর (ছোট পাথর) সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত যাপনের পর ১০ জিলহজ (শনিবার) সকালে সূর্যোদয়ের পর জামারায় পাথর নিক্ষেপের জন্য রওনা দেবেন হাজীরা। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার আগে পূর্বে (দুপুরের আগে) জামারাতুল আকাবায় (বড় শয়তান)-কে ৭টি পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা।

জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপের পর আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় হাজিরা পশু কোরবানি করবেন। এরপর মাথা মুণ্ডন করে এহরাম খুলে পোশাক পড়বেন হাজীরা। একে তাহাল্লুলে আসগর বলা হয়। তারপর তাওয়াফে ইফাদা (কাবাঘর তাওয়াফ) এবং সায়ী (সাফা-মারওয়ায় সাত চক্কর) শেষ করে ফের মিনায় ফিরে যাবেন। ১১ ও ১২ জিলহজ (রোব এবং সোমবার) মিনায় অবস্থান করে সূর্য হেলে পড়ার পর প্রতিদিন ছোট, মধ্য ও বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করবেন হাজীরা।

যারা ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করতে পারবেন না, তারা ১৩ তারিখ মঙ্গলবার সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করবেন এবং জামারায় ১১ ও ১২ তারিখের মতো পাথর নিক্ষেপ করবেন। এরপর বুধবার মক্কায় অবস্থান করে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করবেন হাজিরা। আর যারা মদীনা জিয়ারত করবেন না তারা মদীনার উদ্দেশে মক্কা ত্যাগ করবেন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ