প্রতারণা আর মিথ্যা কথায় মানুষকে না ভুলিয়ে গণতন্ত্রের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
কয়েকদিন ধরে সংসদে অশালীন কথা বার্তা হচ্ছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংসদ নেতা যদি সংসদে মিথ্যা বলেন, অশালীন কথা বলেন তাহলে সেখানে তো উল্টাপাল্টা কথা হবেই।
তিনি বলেন, কোনো পার্লামেন্টের নেতাকে এ ধরনের কথা বলতে শুনিনি এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।
মির্জা আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত কয়েকদিনে তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে দুই নেত্রীকে জেলে যেতে হবে। তিনি বলেন, যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়টি সংবিধানে সংযোজন করা হয়। একটি সাংবিধানিক সরকার হয় তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থকরা পরাজিত হওয়ায় সরকার নিশ্চিত হয়েছে যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী অমূলক ভিত্তিহীন যুক্তি দেখাচ্ছেন।
দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন এদেশের জনগণ মেনে নেবে না উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সুযোগ পেয়েছে তখন রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থা এবং পেশীশক্তির মাধ্যমে জনগণের ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছে।
আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতারা উঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এনে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের পরিবার, আতœীয় স্বজন তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। কেউ কেউ বলছে নিঁখোজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর মতো তার অবস্থা হয়েছে। জনগণ তার খবর জানতে চায় বলেন মির্জা আলমগীর।
সরকার বিভিন্ন কৌশলে মৌলিক অধিকার হরণ করছে অভিযোগ তুলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সভা সমাবেশে বাধা দেয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান। এছাড়াও পদ্মা সেতু দুর্নীতি ষড়যন্ত্র, শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পিয়াস করিম বলেন, সরকার তারেক রহমান ইস্যুকে তুরুপের তাসের মতো ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যখন আন্দোলন চলছে সরকার তারেক রহমান ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করতে চায়। তিনি বলেন, এ চাপ সফল করতে দেয়া যাবে না। তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন।
অধ্যাপক পিয়াস করিম বলেন, চারসিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থিতরা পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে দেশের মানুষের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি অত্যন্ত শক্তিশালী। তাই এই অনুভূতির বাইরে যাওয়া যাবে না।
সংগঠনটির সভাপতি মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল, শ্যামা ওবাায়েদ, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, প্রজন্ম নেতা ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।