রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়পোশাক শিল্প আবারও বড় ধরনের ধাক্কা খেল

পোশাক শিল্প আবারও বড় ধরনের ধাক্কা খেল

দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প আবারও বড় ধরনের ধাক্কা খেল। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসের (জুলাই) তুলনায় দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) রফতানি আরও কমেছে। এ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি আয় কমেছে ১৩ শতাংশেরও বেশি। আর নিটওয়্যার খাতে রফতানি কমেছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ শতাংশ। এদিকে অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে দেশের সামগ্রিক রফতানিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমেছে ৯.১৬ শতাংশ। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ২.০৭ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে রফতানির এই চিত্র দেখা গেছে।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, একক মাস হিসেবে গত আগস্ট মাসেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ২৬১ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় হয়েছে ২১৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান খাত গার্মেন্টস পণ্য রফতানিতে কাঙ্ক্ষিত গতি না আসায় সার্বিক রফতানিতে এর প্রভাব পড়ছে। ইপিবির দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে নিটওয়্যার ও ওভেন রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। আলোচ্য সময়ে ২২৫ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিটওয়্যার পণ্য রফতানি হয়েছে ২২০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। অন্যদিকে ওভেন পণ্যের ক্ষেত্রে ২৩৩ কোটি ২৭ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি হয়েছে ২০২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। অর্থাত্ আলোচ্য সময়ে নিটওয়্যার ও ওভেন রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে যথাক্রমে ২ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ হারে। জুলাই ও আগস্টে ওভেন পোশাক রফতানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ১ দশমিক ৬০ শতাংশ। যদিও আলোচ্য সময়ে নিটওয়্যার রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।
গার্মেন্টস পণ্য রফতানিতে কাঙ্ক্ষিত গতি না ফেরার কারণ তুলে ধরে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমএ’র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম জানান, অনেক কারখানাতেই কাজ কম। তার নিজের কারখানায়ও আগের তুলনায় অর্ডার কমে গেছে। অর্ডার কমে যাওয়ায় অনেক ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নানামুখী কারণে রফতানিকারকদের ব্যয় গড়ে ১৩ শতাংশ বাড়লেও বায়াররা উল্টো দাম কমিয়ে দিচ্ছে। আগামী দিনগুলো রফতানিকারকদের জন্য আরও কঠিন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বর্তমানে বাংলাদেশ ৩২ ধরনের পণ্য রফতানি করে থাকে। এর মধ্যে এককভাবে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি থেকে আসে প্রায় ৮১ শতাংশ আয়।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রফতানি খাতে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের পণ্য। সার্বিক বিবেচনায় চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে যথেষ্ট সাবধানী লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ সময়ে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৩ হাজার ৩২০ কোটি ডলার ধরা হয়েছে। বছর শেষ নাগাদ এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে ইপিবি। তবে রফতানিকারকরা বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বলছেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাও কঠিন হবে। গত দু’মাসে প্রায় সব পণ্যই রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। একই সময়ে ওভেনসহ অনেক পণ্যের রফতানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। এই তালিকায় রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য, বিশেষায়িত বস্ত্র, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য, আসবাবপত্র ইত্যাদি।
অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে নিটওয়্যার ছাড়াও রফতানি বেড়েছে হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, কেমিক্যাল, প্লাস্টিক পণ্য, রাবার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাঠ ও কাঠজাতীয় পণ্য, বাইসাইকেল ও সমুদ্রগামী জাহাজ রফতানি।
  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ