বিজ্ঞানীরা এবার ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাটে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দ্বিতীয় উত্তরাধীকারী প্রিন্স উইলিয়ামের দূর-সম্পর্কের আত্মীয়দের খোঁজ করছে। এর একদিন আগে তারা জানিয়েছে ব্রিটিশ রাজকুমারের শরীরে রয়েছে ভারতীয় ডিএনএ।
ব্রিটিশ ডিএনএ বিষয়ক প্রধান বিজ্ঞানী ও ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার জেনেটিক বিষয়ক অধ্যাপক ড. জিম উইলসন বলেছেন, উইলিয়ামের নানির নানি, তার নানি, তারও নানি এলিজা কিউয়ার্ক দুই সন্তানের জন্ম দেন। ক্যাথেরিন স্কট ফোর্বসের জন্ম হয় ১৮১২ সালে আর তার দুই বছর পর জন্ম হয় আলেক্সজান্ডারের। আলেক্সজান্ডার ভারতে ফিরে যান এবং সেখানেই থাকেন। ধারণা করা হচ্ছে এখন ভারতে তার উত্তরসূরিরা থাকতে পারেন।
১৭৮৮-১৮২০ সালের কথা। উইলিয়ামের প্রপিতামহ থিওডোর ফোর্বস ব্যবসাসূত্রে তখন গুজরাটের সুরাটে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হয়ে কাজ করতেন তিনি। থিওডোরের বাড়িতে কাজের মহিলা ছিলেন এলিজা কিউয়ার্ক। এই এলিজাই ছিলেন থিওডোরের মেয়ে ক্যাথরিনের মা।
ক্যাথরিনকে মাত্র ছয় বছর বয়সেই ব্রিটেনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ফোর্বস। ১৮২০ সালে ব্রিটেনে ফেরার পথে জাহাজে মারা ফোর্বস। তিনি তার উইলে এলিজাকে পরিচারিকা ও তার মেয়ে ক্যাথরিনের মা বলেই উল্লেখ করেছিলেন। গবেষকদের অনুমান, ভারতীয় মায়ের কাছ থেকে মেয়েকে দূরে রাখতেই ক্যাথরিনকে ব্রিটেনে ফেরত পাঠিয়েছিলেন ফোর্বস।
এলিজার থেকেই ক্যাথরিন হয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ অক্ষতভাবে ছড়িয়ে পড়ে উত্তরসূরিদের দেহে। আর চলে এসেছিল ডায়ানার শরীরেও। তারপর উইলিয়াম এবং হ্যারির দেহেও।
এলিজা যদিও নিজেকে মার্কিন বলে দাবি করতেন। তার নামটাও তেমনই বলে। থিওডোরকে লেখা এলিজার চিঠির ভাষাতেও ছিল মার্কিন ধাঁচ। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, নাম-ভাষার টান সবটাই পাওয়া এলিজার বাবার থেকে। তিনি হয়তো মার্কিন ছিলেন।
‘ব্রিটেনস ডিএনএ’ সংস্থার দাবি, “আমাদের কাছে যা তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে পরিষ্কার এলিজার মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত।”
তারা আরও বলেছেন, “উইলিয়াম-হ্যারি, দুই ভাইয়ের শরীরেই ওই ডিএনএ থাকলেও, তাদের সন্তানের শরীরে তা প্রবেশ করবে না। কারণ মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধুমাত্র মায়ের শরীর থেকে সন্তানের শরীরে যায়। বাবার কোনও ভূমিকা নেই।”
জিম নিজে হাতে এই পরীক্ষাটি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘উইলিয়াম-হ্যারির শরীরে থাকা ওই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ-টি বিরল। এতো দিনে মাত্র ১৪ জনের দেহে ওই জিন খুঁজে পেয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে ১৩ জনই ভারতীয়। একজন ছিলেন নেপালি।