ষ্টাফ রিপোর্টার (বিডিসময়২৪ডটকম)
পরেশ বড়ুয়া। ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) এর সর্বাধিনায়ক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারত সরকারের কাছে থেকে আসামের স্বাধীনতা দাবি করে আসছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে সম্পন্ন হওয়া দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ফাঁসির রায় হয়েছে তার।
১৯৫৭ সাল। আসামের জিরাইছাকলি ভারাইগাও এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন পরেশ বড়ুয়া। পিতার নাম দ্বিজেন বড়ুয়া। কখনো তিনি পরেশ বড়ুয়া থেকে হয়ে যেতেন কামরুজ্জ জামান খান, আবার কখনো নিজেকে পরিচয় দিতেন জামান ভাই নামে। একসময় আসামের দাপুটে ফুটবলার ছিলেন ভারতের এই বিচ্ছিনতাবাদী নেতা। পড়ালেখা করেছেন দিবরুঘর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯৭৮-১৯৮২। এই সময়ে রেলওয়েতে চাকরি করেছেন পরেশ। এরপর কিছুদিন কাজ করেন দুলাইজানের অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানে।
১৯৭৯। পরেশ উলফার সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তিন বিয়ে করেছেন ববি ভুইয়ান বড়ুয়াকে। তাদের ঘরে তাহসিম খান এবং আকাশ খান নামে দুই ছেলে রয়েছে। অন্য একটি সূত্র জানায়, তার বড় ছেলের নাম তাহসিন অঙ্কুর খান সুনলি।
১০ মে, ১৯৮৫। উলফার কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে ব্যাংকে ডাকাতি করেন পরেশ বড়ুয়া। লুট করেন ২৭ হাজার পাঁচ শ ৪৯ রুপি।
১৯৮৯। মায়ানমারের নাগাল্যান্ড এবং কাচিন ডাকাত দলের সঙ্গে চুক্তি করেন পরেশ। এই দুটি দল উলফাকে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ১৯৯০ সালের দিকে তারা ‘আন্দোলনে’ সক্রিয় হন।
পরেশ ১৯৯০ সাল থেকে কয়েকবছর বাংলাদেশে অবস্থান করেন। তখন নিজেকে কামরুজ্জ জামান খান নামে পরিচয় দিতেন। ২০০৪ সালের পর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান এই বিচ্ছিনতাবাদী নেতা।
বাংলাদেশে থাকাকালীন নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য বেশ ভালোভাবেই ঘুচিয়ে নিচ্ছিলেন পরেশ। কয়েক বছরের ব্যবধানে বিস্তার করেছিলেন ট্যানরি শিল্প, কয়েকটি ডিপার্টমেন্টাল দোকান, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, পরিবহণ সংস্থা, তারকা হোটেলসহ আরো অনেক ব্যবসা।
সর্বশেষ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সীমান্তে জঙ্গলে পরেশ বড়ুয়ার অবস্থানের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সে সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গুলিতে তিনি আহত হন বলেও শোনা যায়। বর্তমানে তার অবস্থান নিয়ে নানা গুজব থাকলেও তিনি ঠিক কোথায়, সেটি রহস্যই হয়ে আছে সবার কাছে।